বাবা সবজি বিক্রেতা। দাদা শ্রমিক। ছোটো বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দেশের বহু মেয়ের কাছে, এমন পরিস্থিতিতে সামান্য পড়াশোনার স্বপ্ন দেখাই বিলাসিতা। কিন্তু আর্থিক কষ্টকে কখনই স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেননি অঙ্কিতা নাগর। এক নাগাড়ে চালিয়ে গিয়েছেন তাঁর লড়াই। আর সেই কারণেই বছর ২৫-এর অঙ্কিতা এখন আদালতের বিচারক।
সিভিল জজ কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাশ করেছেন ইন্দোরের অঙ্কিতা। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও লড়াই করলেন কীভাবে?
অঙ্কিতা জানালেন, তাঁদের আর্থিক সঙ্গতি কম হতে পারে। পরিবারে তিনিই একমাত্র উচ্চশিক্ষার পথে পা বাড়িয়েছেন। কিন্তু কখনও পরিবারের সমর্থনের অভাব বোধ করেননি। তাঁর পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ, অধ্যাবসায় দেখে সবসময়েই তাঁর পাশে থেকেছেন বাড়ির সকলে। প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা রুটিন মেনে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি।
অঙ্কিতা জানান, এসসি কোটার মেধাতালিকায় তিনি পঞ্চম হয়েছেন। ফলাফল এক সপ্তাহ আগেই ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এক আত্মীয়ের মৃত্যুর কারণে রেজাল্ট চেক করাই হয়নি তাঁর। বুধবার শেষমেশ রেজাল্ট খুলে দেখেন। আর তারপরেই পালটে যায় তাঁর জীবন।
অঙ্কিতার বাবা ইন্দোরের মুসাখেদি এলাকায় ঠেলাগাড়িতে সবজি বিক্রি করেন। আর্থিক সমস্যা সত্ত্বেও, তাঁর বাবা-মা সবসময় পড়াশোনা করতে উত্সাহ দিতেন। অঙ্কিতা বলেন, বাবা প্রতিদিন ভোর পাঁচটায় কাজে যান। আর মা সকাল আটটার পর বাবার সঙ্গে যোগ দেন। অনেক সময় আমাকেও বাবা-মাকে ব্যবসায় হাত লাগিয়ে টুকটাক সাহায্য করতে হয়।
আপাতত অঙ্কিতাকে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তারপর মধ্যপ্রদেশে সিভিল জজ হিসেবে যোগ দেবেন। মোটা বেতন, গাড়ি, কোয়ার্টার সবই পাবেন তিনি।
অঙ্কিতার কৃতিত্বে তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসীরা গর্বিত। অনেকেই বলছেন, অঙ্কিতা ও তাঁর বাবা-মা দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে মেয়েদের পড়াশোনা শেখাতে উত্সাহিত করবে।