হরিয়ানার সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হিংসায় এবার রোহিঙ্গা যোগ মিলল। এমনই দাবি করেছে হরিয়ানা পুলিশ। নুহ জেলার এসপি নরেন্দ্র বিজরনিয়া জানান, হরিয়ানায় বেআইনি ভাবে বসাবসরত বেশ কিছু রোহিঙ্গা ৩১ জুলাইয়ের হিংসায় যুক্ত ছিল। এই রোহিঙ্গারা পাথর ছুঁড়েছিল বলে অভিযোগ। এই আবহে পুলিশ সুপার জানান, তারা দোষীদের চিহ্নিত করে একটি তালিক বানিয়েছে। এবং প্রমাণের ভিত্তিতেত অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অন্তত ১৭ জন রোহিঙ্গা রয়েছে পুলিশের সন্দেহের তালিকায়। এদিকে রোহিঙ্গাদের বাসস্থানও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। এই আবহে বাস্তুহীন হয়ে পড়েছে এই শরণার্থীরা।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বিতারিত করেছিল সেখানকার সরকার ও সেনা। সীমান্ত পার করে সেই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ এবং ভারতে চলে আসে। বর্তমানে দেশে রাষ্ট্রসংঘ অনুমোদিত ১৬ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে। তাছাড়া বেআইনি ভাবে আরও ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ভারতে বাস করে বলে সরকারের অনুমান। এরা মূলত মুসলিম ধর্মাবলম্বী। জম্মু এলাকায় প্রচুর সংখ্যর রোহিঙ্গার বাস। হরিয়ানার নুহ জেলাতেও অনেক রোহিঙ্গা থাকে। এই আবহে সম্প্রতি রোহিঙ্গা বসতির প্রায় ৫০টি ঘর ভেঙে দেওয় হয়। অভিযোগ, ৩১ জুলাইয়ের হিংসায় জড়িত ছিল এই বসতির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই একটি ধর্মীয় মিছিলকে আটকানোর অভিযোগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় হরিয়ানার নুহ এবং গুরুগ্রাম জেলায়। উল্লেখ্য, হরিয়ানার বজরং দল কর্মী মনু মানেসারকে কেন্দ্র করেই সেখানের নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায় গতকাল হিংসা ছড়ায়। গত ফেব্রুয়ারিতে ভিওয়ানিতে দুই মুসলিম যুবককে খুন করার ঘটনায় মনু পলাতক। সেই মনু ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেছিল এই ধর্মীয় মিছিলে সে থাকবে। এই আবহে গুরুগ্রাম আলওয়ার হাইওয়েতে এই যাত্রা থামান কয়েকজন। এরপরই মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি গাড়িকে লক্ষ্য পাথর ছোঁড়া হয়। সেই সময় পাশের এক শিবমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫০০ মানুষ।
সেদিন সন্ধ্যার দিকে গুরুগ্রাম সোহনা হাইওয়েতে হিংসা ছড়াতে থাকে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বেশ কিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মস্থানেও হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইট বৃষ্টি। হিংসার ঘটনায় দুই হোমগার্ড সহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু ঘটেছে। মৃত হোমগার্ডদের নাম - নীরজ এবং গুরুসেবক। ঘটনায় জখম আরও অন্তত ২০০ জন। পরে অন্যত্র হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। রাতে সেক্টর ৫৭-এর মসজিদে হামলা হয়েছিল। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মসজিটিতে। সেখানে চালানো হয়েছিল গুলি। তাতে মৃত্যু হয়েছিল এক ইমামের। জখম হয়েছিলেন আরও তিনজন।