সামরিক অভ্যুত্থান ক্ষণস্থায়ী হলেও যত সময় যাচ্ছে, তত রাশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে জল্পনা বাড়ছে। শনিবার দুপুরের পর থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জনসমক্ষে দেখা না যাওয়ায় তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছিল। তারইমধ্যে সোমবার পুতিনের বার্তা প্রকাশ করেছে ক্রেমলিন। যদিও সেই ভিডিয়ো কবে রেকর্ড করা হয়েছে, তা নিয়ে ধন্দ আছে সংশ্লিষ্ট মহলের। তারইমধ্যে একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, অভ্যুত্থানের পথ ছেড়ে দিলেও ‘ভাড়াটে সৈন্য’ ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে এখনই রাশ আলগা করছে না ক্রেমলিন। তাঁর বিরুদ্ধে যে যে অপরাধমূলক ধারায় মামলা করা হয়েছিল, সেগুলি এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি বলে একাধিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
গত শনিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও রাশিয়ার সেনার শীর্ষ নেতৃত্বকে উৎখাত এবং সামরিক অভ্যুত্থানের যে ডাক দিয়েছিলেন প্রিগোজিন, সেজন্য তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। রস্টভ-অন-ডন এবং ভারোনেস দখল করার পরে মস্কোর দিকে এগিয়ে গেলেও রাশিয়ার রাজধানীর ২০০ কিলোমিটার আগে থেকেই ফিরে যান প্রিগোজিন। রাশিয়ার বন্ধুরাষ্ট্র বেলারুশের সঙ্গে চুক্তি করে রণেভঙ্গ দেন। তারপরও নাকি তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করেনি ক্রেমলিন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিমানেও এবার মেক ইন ইন্ডিয়া, বড় সাফল্য মোদীর মার্কিন সফরের
সংবাদসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সূত্র উদ্ধৃত করে রাশিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত তিনটি সংবাদসংস্থা জানিয়েছে যে পিছু হটে গেলেও প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে যে অপরাধমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছিল, তা এখনও রয়ে গিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, এককালের ‘বন্ধু’ প্রিগোজিন যে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছেন, সেটার জন্য কি তাঁকে একেবারে ঢাল-তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দারে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছেন পুতিন? যাতে চিরকালের মতো ‘বিষদাঁত’ উপড়ে ফেলতে পারেন?
কিন্তু এখন কোথায় আছেন প্রিগোজিন?
আপাতত প্রিগোজিন কোথায় আছেন, তা নিয়ে প্রবল জল্পনা চলছে। সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করা না হলেও সংবাদসংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার একটি প্রথমসারির টিভি চ্যানেলে দাবি করা হয়েছে যে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কের একটি হোটেলে প্রিগোজিনকে দেখা গিয়েছে। সেই দাবি উড়িয়েও দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ ইতিমধ্যে ক্রেমলিন জানিয়েছে যে বেলারুশে চলে যাবেন প্রিগোজিন।
তারইমধ্যে শনিবারের ঘটনার পর থেকে সোমবার প্রথমবারের জন্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু জনসমক্ষে আসেন। যে সের্গেইকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান প্রিগোজিন। ক্রেমলিনের তরফে যে ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে যে ইউক্রেনে লড়াই করা রাশিয়ার ফৌজিদের সঙ্গে দেখা করেছেন সের্গেই।