প্রখ্যাত রুশ বিরোধী নেতা এবং পুতিনের তীব্র সমালোচক অ্যালেক্সেই নাভালনির সাজার মেয়াদ আরও বাড়ল। শুক্রবার তাঁকে আরও ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১১ বছর ধরে জেলে রয়েছেন অ্যালেক্সেই। ফলে আরও ১৯ বছর যুক্ত হওয়ার বলে তাঁর সাজার মেয়াদ বেড়ে হবে প্রায় ৩১ বছর। নাভালনির সংস্থার এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিও এর সমালোচনা করেছে।
আরও পড়ুন: রুশ TVতে ইউক্রেন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী পুতিন! ওয়াগনার অভ্যুত্থানের মাঝে বহু জল্পনা
এদিন সাজা ঘোষণার পরে নাভালনির সংস্কার তরফে একটি ফেসবুক পোস্টে জনতার উদ্দেশ্যে বলা হয়, ‘তারা আপনাদের ভয় দেখাতে চায় এবং আপনাকে প্রতিবাদ করার ইচ্ছা থেকে বঞ্চিত করতে চায়। ক্ষমতা দখলকারী, বিশ্বাসঘাতক এবং চোর একটি দলের কাছে লড়াই না করেই রাশিয়াকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। আপনারা প্রতিবাদ করার ইচ্ছা হারাবেন না।’ উল্লেখ্য, ইউক্রেনের ওপর হামলার পরেই বিরোধীদের দমানোর চেষ্টা করছে রুশ সরকার। তারপরেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে মনে করছে বিশিষ্ট মহল। নাভালনির বিচার হয়েছে বন্ধ দরজার পিছনে আই কে ৬ পেনাল কলোনিতে। নাভালনিকে রাখা হয়েছে মস্কো থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার পূর্বে একটি কড়া নিরাপত্তা বিশিষ্ট জেলে। প্রসঙ্গত, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক হিসেবে বিখ্যাত নাভালনি। তিনি বহুদিন ধরেই দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন।
এই রায়ের পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি কড়া নিন্দা করেছে। ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই রায়কে ‘অন্যায় বিচার’ বলে অভিহিত করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটিকে ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায়’ বলে নিন্দা করেছে। সেইসঙ্গে নাভালনির অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব জেমস ক্লিভারলি টুইট করে রাশিয়ায় মানুষ মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।
এই রায় প্রসঙ্গে নাভালনি বলেন, ‘আরও ১৯ বছর আমাকে জেলে থাকতে হবে। আমার কাছে সংখ্যা কোনও ব্যাপার না। আমি পুরোপুরি বুঝতে পারি যে, অনেক রাজনৈতিক বন্দির মতো আমিও যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছি।এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, কয়েদিদের জন্য বরাদ্দ কালো পোশাক পরেই আদালতে হাজির করানো হয়েছে নাভালনিকে। দুই বাহু ভাঁজ করে তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আর বিচারক তাঁর রায় ঘোষণা করছেন। যদিও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তিনি কী বলছেন তা স্পষ্ট করে শোনা যায়নি।