সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানে থাকা নাগরিকদের সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছে, আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া। এবার সেই পথে হেঁটে পাকিস্তানে থাকা নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলল সৌদি আরবও। সৌমবার এই সতর্কতা জারি হয়েছে। সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, 'পাকিস্তানের রাজধানীতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই আবহে পাকিস্তানে ভ্রমণকারী সকল সৌদি নাগরিককে বলা হচ্ছে, খুব প্রয়োজন না হলে বাইরে বের হবেন না।' পাশাপাশি টুইট করে তিনটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে সৌদি আরবের তরফে। যে কোনও আপতকালীন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের রাজধানীতে অবস্থিত সৌদি দূতাবাস অথবা করাচির কনসুলেট জেনারেলে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে সৌদি নাগরিকদের।
এর আগে আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ নিজেদের নাগরিকদের উদ্দেশে পাকিস্তানে ভ্রমণ করা নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছে সম্প্রতি। আমেরিকার তরফে নির্দিষ্ট করে ইসলামাবাদের ম্যারিয়ট হোটেলে যেতে বারণ করা হয়েছে নাগরিকদের। বলা হয়েছে, 'ছুটির দিনে ইসলামাবাদের ম্যারিয়ট হোটেলে আমেরিকানদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছে অজানা ব্যক্তিরা।' এদিকে বছর শেষে কোনও কারণ ছাড়া ইসলামাবাদে ভ্রমণ করার বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে মার্কিন নাগরিকদের। প্রসঙ্গত, বিগত কয়েকদিন ধরেই পাকিস্তানের একাধিক জায়গায় একের পর এক হামলা হয়েছে। বালোচ স্বাধীনতাকামী সংগঠন থেকে শুরু করে টিটিপি (পাকিস্তানি তালিবান) হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের বহু জায়গায়। এরই মধ্যে ইসলামাবাদে কয়েকদিন আগেই একটি আত্মঘাতী গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এদিকে আমেরিকার সতর্কতা জারির পরপরই ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার তরফে পাকিস্তানে ভ্রমণরত নাগরিকদের উদ্দেশে সতর্কতা জারি করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনের তরফে নাগরিকদের উদ্দেশে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ ডিসেম্বর ইসলামাবাদের I-10/4 সেক্টরে একটি গাড়িতে বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণে গাড়িসহ নিজেকে উড়িয়ে দেয় এক জঙ্গি। বিস্ফোরণের ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি চার পুলিশ সদস্য গুরুতর জখম হন। এছাড়াও ঘটনায় দুই সাধারণ নাগরিক এবং আত্মঘাতী জঙ্গির সঙ্গে থাকা এক মহিলা জখম হয়েছিলেন। যুদ্ধবিরতি থেকে পিছু হটার পর তেহরিক-ই-তালিবান বা টিটিপি পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে। সম্প্রতি এক ঘটনায় জেল ভেঙে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বন্দি বানিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। অপরদিকে বালোচিস্তানে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর ঘুম উড়িয়েছে বালোচ স্বাধীনতাকামীরা। এই পরিস্থিতিতে বর্ষ শেষে পাকিস্তানের হাল খারাপ। উল্লেখ্য, এর আগেও পাকিস্তানে বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলার নজির রয়েছে প্রচুর। এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে ফের বিদেশিদের ওপর হামলার ছক কষা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।