নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে ‘জাতির পুত্র’ ঘোষণা করা হোক। এই আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাটি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। মামলা খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, নেতাজি হলেন অমর। তাই বিচার বিভাগের মাধ্যমে তার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। মামলায় কংগ্রেসকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল যে, কংগ্রেস নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর অবদানকে অবমূল্যায়ন করেছে। তাঁর অন্তর্ধান বা মৃত্যুর বিষয়ে সত্য প্রকাশ না করার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলছেন মামলাকারী।
আরও পড়ুন: আজাদ হিন্দ ফৌজ থেকে ভারতীয় সেনা- ৪ প্রজন্মের ঐতিহ্য বজায় রাখলেন কলকাতার অর্জুন
সুপ্রিম কোর্টে এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন ওড়িশার কটকের বাসিন্দা পিনাক পানি মোহান্তি। তিনি আবেদনে দাবি করেছেন, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সুতরাং তাঁকে জাতির পুত্র ঘোষণা করা উচিত। শীর্ষ আদালতের মতে, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজির ভূমিকাকে স্বীকার করার জন্য বা একটি ঘোষণার জন্য বিচার বিভাগের আদেশ যুক্তিপূর্ণ হবে না। কারণ তাঁর মতো একজন মহান নেতার মর্যাদার সঙ্গে সেটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পার। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ বলেছে, ‘নেতাজির মতো নেতাকে কে না চেনে? দেশের সকলেই তাঁকে এবং তাঁর অবদান সম্পর্কে জানে। তাঁর মাহাত্ম্য দেখানোর জন্য আদালতের আদেশের প্রয়োজন নেই। তাঁর মতো নেতারা অমর। তাঁরা মহান মানুষ এবং সমগ্র দেশ তাঁদের সম্মান করে। তাঁর মতো নেতার আদালতের কোনও স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই।’
আবেদনকারী নেতাজির অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস নটাহুর অন্তর্ধান বা মৃত্যু সম্পর্কিত তথ্য ফাইলগুলিকে গোপন রেখেছে। উল্লেখ্য, একই ধরনের জনস্বার্থ এর আগেও সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয়েছিল। যেখানে দাবি করা হয়েছিল, ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকীতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা উচিত। এছাড়াও, পিটিশনে দাবি করা হয়েছিল দিল্লি এবং সমস্ত রাজ্যের রাজধানীতে নেতাজির সম্মানে একটি স্মারক হল এবং যাদুঘর তৈরি করা হোক। এই আবেদনটিও সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছিল। আদালত বলেছিল, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী উদযাপনের সর্বোত্তম উপায় হল সেই দিনে কঠোর পরিশ্রম করা, ঠিক যেমন নেতাজি নিজে দেশের স্বাধীনতার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। আদালত বলেছিল, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নির্বাহী বিভাগের রয়েছে।