দিল্লির যন্তর মন্তরে বিগত বেশ কয়েক দিন ধরেই প্রতিবাদ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে চলেছেন দেশের তাবড় কুস্তিগীররা। কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি সাংসজ ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে এই প্রতিবাদ। অলিম্পিকে পদকজয়ী বজরং পুনিয়, সাক্ষী মালিকরা যেমন এই প্রদিবাদে সামিল হয়েছেন, তেমনই প্রতিবাদ করছেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পদকজয়ী ভিনেশ ফোগাট এবং অন্যান্য তরুণ কুস্তিগীররা। আর এরই মধ্যে এবার পুলিশের বিরুদ্ধে উঠল গুরুতর অভিযোগ। গতকাল গভীর রাতে কুস্তিগীরদের বিক্ষোভ স্থলে হুলুস্থুল কাণ্ড বাঁধে। পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি হয় কুস্তিগীরদের। বজরংরা অভিযোগ করেন যে মত্ত অবস্থায় নাকি পুলিশকর্মীরা তাঁদের মারধর করেছেন।
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে মাটিতে শুয়েই রাত কাটাচ্ছিলেন কুস্তিগীররা। তবে গতকাল দিল্লিতে দিনভর বৃষ্টি হয়। এই আবহে কুস্তিগীররা অবস্থান বিক্ষোভের জায়গায় খাটিয়া নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন ঘুমানোর জন্য। এর থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। অভিযোগ, পুলিশ খাটিয়া নিয়ে আসতে বাধা দেয়। শুধু তাই নয়, কুস্তিগীরদের মারধর করে পুলিশ। মহিলা কুস্তিগীরদের গালিগালাজও করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, পুলিশের মারে দুই কুস্তিগীরের মাথায় আঘাত লেগেছে। একজন কুস্তিগীর অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে দিল্লি পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'গতকাল যন্তর মন্তরের অবস্থান বিক্ষোভের জায়গায় কিছু খাটিয়া নিয়ে এসিছেলেন সোমনাথ ভারতী (আম আদি পার্টি নেতা)। তবে তিনি কোনও অনুমতি ছাড়াই খাটিয়া নিয়ে এসেছিলেন সেখানে। সেই সময় পুলিশ হস্তক্ষেপ করলে তাঁর সমর্থকরা মারমুখী হয়ে পড়ে। ট্রাক থেকে খাটিয়া নামাতে উদ্যত হয় তারা। এরপর ছোটখাটো সংঘর্ষ বাঁধে। ঘটনায় সোমনাথ ভারতী এবং দু'জনকে আটক করা হয়েছে।' এই ঘটনার পর অবশ্য অবসরপ্রাপ্ত কুস্তিগীর রাজবীর অভিযোগ করেন, 'একজন পুলিশকর্মী মত্ত অবস্থায় ভিনেশ ফোগাটকে গালিগালাজ দিয়েছেন। তাঁর নাম ধর্মেন্দ্র। তিনি আমাদের সঙ্গে হাতাহাতিও করেন।'
ঘটনার পর ভিনেশ ফোগাট সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমরা শুধুমাত্র কিছু খাটিয়া আনতে চাইছিলাম এখানে। সেই সময় কিছু পুলিশকর্মী এখানে এসে আমাদের বাধা দেন। কোনও মহিলা পুলিশকর্মীর অপেক্ষা না করেই আমাদের নিয়ে টানাহেঁচড়া করতে শুরু করেন পুলিশকর্মীরা। আমাদের মধ্যে অনেককেই লাঠি দিয়ে মাথায় বাড়ি মারা হয়েছে। আমরা কি দেশের জন্য মেডেল জিতেছিলাম এই দিনটা দেখার জন্য? আমাদের যখন কনস্টেবলরা ধাক্কা দিচ্ছিল, তখন মহিলা পুলিশকর্মীরা কোথায় ছিলেন?' এদিকে আবেগতাড়িত হয়ে বজরং পুনিয়া ক্যামেরার সামনে বলেন, 'আমি সরকারকে অনুরোধ করছি যাতে আমি যে যে মেডেল জিতেছি, তা সব তারা ফেরত নিয়ে নেয়।'