অবসরের পরে অনেকেরই ভরসার স্কিম হল ‘সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম’। যা পোস্ট অফিসে করা যায়। করছাড়-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থাকায় প্রবীণ নাগরিকদের অনেকেই সেই স্কিমে বিনিয়োগ করে থাকেন। আর তা থেকে সুদ-সহ টাকা পান। আর সেই সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমের একাধিক নিয়ম পরিবর্তন করল কেন্দ্রীয় সরকার। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে যেসব নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে, তাতে লাভবান হবেন প্রবীণ নাগরিকরা। জীবনভর টাকা পাওয়ার রাস্তা তৈরি হয়ে গেল। আবার সেই নিয়ম পরিবর্তনের ফলে প্রয়াত সরকারি কর্মচারীদের পরিবারও উপকৃতও হবে।
কী কী নিয়ম পরিবর্তন করা হল?
১) এবার থেকে প্রয়াত সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গীরাও সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমের অ্যাকাউন্ট (SCSS) খুলতে পারবেন। এতদিন প্রয়াত সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গীদের সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমের অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি ছিল না। এবার সেই বিধিনিষেধ তুলে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। তার ফলে তাঁরা সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। বাড়বে আর্থিক সুরক্ষা।
২) সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আরও বেশি সময় পাবেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা। এতদিন অবসর সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধার রশিদ পাওয়ার এক মাসের মধ্যে তাঁদের সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম অ্যাকাউন্ট খুলতে হত। এখন সেটা বাড়িয়ে করা হল তিন মাস।
এমনিতে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে সেই অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। তবে যাঁদের বয়স ৫৫-র বেশি এবং ৬০-র কম, তাঁরাও সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের একটি শর্ত পূরণ করতে হবে। যাঁরা ‘সুপার অ্যানুয়েশন’-র মাধ্যমে আগেই অবসর গ্রহণ করেছেন, তাঁরা সেই সুযোগ পাবেন।
৩) সরকারের নয়া নিয়ম অনুযায়ী, সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমে যতদিন ইচ্ছা ততদিন বিনিয়োগ করতে পারবেন উপভোক্তারা। তিন বছর করে একাধিকবার সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম অ্যাকাউন্ট মেয়াদ বাড়ানো যাবে। সেটার ক্ষেত্রে কোনও সর্বোচ্চসীমা রাখা হয়নি। অর্থাৎ যতদিন ইচ্ছা, ততদিন সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমের অ্যাকাউন্টের মেয়াদ বাড়ানো যাবে। এতদিন মাত্র তিন বছর মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ ছিল।
সেইসঙ্গে সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম অ্যাকাউন্ট মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি কবে কার্যকর হবে, সেই সংক্রান্ত নিয়মও পরিবর্তন করা হয়েছে। যেদিন আবেদন করা হয়েছে, সেদিন থেকে অ্যাকাউন্টের মেয়াদ বৃদ্ধির নিয়ম কার্যকর হত। কিন্তু এখন সেটা হবে না। ম্যাচিওরিটির দিন থেকে বা প্রতিটি তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন থেকে মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে ধরা হবে। যখনই আবেদন করা হোক না, সেটা বিবেচনা করা হবে না।
অর্থাৎ সহজ করে বলতে গেলে ম্যাচিওরিটির দিন থেকে বা প্রতিটি তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন থেকে বর্ধিত হারে সুদ পাবেন সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমের অ্যাকাউন্টধারীরা (যখন আবেদন জমা দেওয়া হোক না কেন)। তার ফলে সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম অ্যাকাউন্টধারীদের কোনও লোকসান হবে না। তাঁরা সুদ পেতে থাকবেন।
আর নিয়ম অনুযায়ী, সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম অ্যাকাউন্টের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ম্যাচিওরিটি বা প্রতিটি তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছরের মধ্যে ফর্ম-৪ নিয়ে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম অ্যাকাউন্টের মেয়াদ বাড়ানো হয়। যে প্রকল্প পোস্ট অফিসের অন্যতম জনপ্রিয় স্কিম।
আরও পড়ুন: Train Ticket Concession: 'ট্রেনের টিকিটে ৫০% ছাড় সিনিয়র সিটিজেনদের', কনসেশন অন্যদেরও? মুখ খুলল রেল