তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের ছেলে তথা রাজ্যের যুব ও ক্রীড়া দফতরের মন্ত্রী উদয়নিধির মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতির তরজা। শনিবার এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার সঙ্গে সনাতন ধর্মকে তুলনা করেন। তিনি বলেন, এদের মতো সনাতন ধর্মেরও নির্মূল করা উচিত। তাঁর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া কে কী বললেন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর: ' কী প্রতিক্রিয়ার হবে তা না ভেবেই 'সনাতন ধর্ম', হিন্দু ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করেছেন উদয়নিধি। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন যে তাঁর অর্থ, সম্পদ এবং রাজবংশীয় অবস্থান তাঁকে এমন জায়গায় ফেলেছে যেখানে তিনি হাজার হাজার ভারতীয় এবং তামিলের মানুষকে অপমান করতে পারেন। উদয়নিধি ও স্টালিন হলেন এমন ব্যক্তি যাঁরা তাঁদের জীবনে একদিনের জন্যও সৎ কাজ করেননি। তাঁরা এমন কিছু সম্পর্কে কথা বলছেন যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশ্বাসের।'
বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়াল্লা: 'এটি গণহত্যার ডাক দেওয়ার চেয়ে কম কিছু নয় এবং এই মন্তব্য কংগ্রেস দলের কার্তি চিদাম্বরম সমর্থিত।'
তামিলনাড়ু বিজেপির সভাপতি কে আন্নামালাই: 'আপনাকে যদি 'সনাতন ধর্ম' মুছে ফেলতে হয়, তবে আপনাকে সমস্ত মন্দির এবং মানুষের প্রয়োজনীয় ধর্মীয় অনুশীলনগুলি শেষ করতে হবে...। গতকাল উদয়নিধি যা বলেছেন তা দেশের ১৪২ কোটি মানুষের নিন্দা করা উচিত কারণ তা একটি নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতি ঘৃণা। তিনি একটি লেখা থেকে বক্তৃতাটি পড়ছিলেন, যা সচেতনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিল। একটি নির্দিষ্ট সংস্কৃতির নির্মূলকে গণহত্যা বলা হয়... 'সনাতন ধর্ম' বাতিল করার উদয়নিধি বা স্ট্যালিন কে?..'
(পড়তে পারেন। ‘ইন্ডিয়া জোট হিন্দুত্বকে ঘৃণা করে!’ উদয়নিধির মন্তব্যকে জোটের ঘাড়ে ঠেললেন শাহ)
কংগ্রেস নেতা আচার্য প্রমোদ: 'নেতাদের মধ্যে হিন্দুদের গালাগালি করার প্রতিযোগিতা চলছে। ১০০০ বছর ধরে 'সনাতন ধর্ম' মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। কেউ এটি মুছে ফেলতে পারেনি...'
রাজ্যসভার সাংসদ এবং আরজেডি নেতা মনোজ ঝা: 'আমি বুঝতে পারি যে কখনও কখনও আমাদের প্রতীকী অভিব্যক্তিতে অনুসন্ধান করতে হয়।'
আপ নেতা সঞ্জয় সিং: '...ভারতে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও ভাষা রয়েছে। এটাই আমাদের সৌন্দর্য যে তা সত্ত্বেও আমরা একসঙ্গে থাকি... উদয়নিধির এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আমি শুধু বলতে চাই যে ভারতে আমাদের প্রতিটি ধর্মকে সম্মান করা উচিত এবং অন্যের ধর্ম নিয়ে কারও মন্তব্য করা উচিত নয়।'
প্রতিবাদের পাল্লা ক্রমশ ভারী হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে ডিএমকে যুগ্ম সম্পাদক এবং মুখপাত্র সারাভানন আন্নাদুরাই উদয়নিধির পক্ষে সাফাই দিতে এগিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ' উদয়নিধির বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যদি কংগ্রেস মুক্ত ভারতের কথা বলেন তাহলে কি তিনি গণহত্যার ডাক দিচ্ছেন না? তা যদি না হয়, তবে এক্ষেত্রে তাঁরা কী করে উদয়নিধি স্ট্যালিনের বক্তব্যকে গণহত্যার ডাক বলছেন? এ জন্য তাঁদের আইনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। যখন আমরা বলি আমরা 'সনাতন ধর্ম' দূর করতে চাই তার মানে আমরা কঠোর বর্ণপ্রথা দূর করতে চাই...'