ভারতের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ুয়াদের আত্মহত্যা নিয়ে তথ্য প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার সংসদে শিক্ষা মন্ত্রকের জমা দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি, এনআইটি এবং আইআইএম সহ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মোট ৯৮ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছেন।
রাজ্যসভায় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) সদস্য ভি শিবাদাসনের এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার জানান, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চে গত পাঁচ বছর এবং চলতি বছরে মোট ৯৮ জন পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছেন। তথ্য অনুসারে, এই ৯৮ জন পড়ুয়াদের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক আত্মহত্যা হয়েছে আইআইটি-র ক্যাম্পাসগুলিতে। দেশের বিভিন্ন আইআইটি-তে মোট ৩৯ জন আত্মঘাতী হয়েছেন গত পাঁচ বছরে। তারপরেই তালিকায় আছে এনআইটি। সেখানে আত্মহত্যা করেছেন ২৫ জন পড়ুয়া। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও আত্মঘাতী হয়েছেন ২৫ জন। এছাড়া আইআইএম-এ আত্মহত্যা করেছেন ৪, আইসার-এ ৩, আইআইআইটি-র ২ পড়ুয়া।
এদিকে বার্ষিক তথ্য অনুসারী, ২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত আত্মঘাতী হয়েছেন ২০ জন পড়ুয়া। ২০২২ সালে মোট সংখ্যাটা ছিল ২৪। এর আগে ২০২১ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন ৭ জন পড়ুয়া। ২০২০ সালেও আত্মঘাতী পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ৭। ২০১৯ সালে আত্মত্যা করেছিলেন ১৯ জন পড়ুয় এবং ২০১৮ সালে আত্মঘাতী পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ২১।
এদিকে সুভাষ সরকার জানান, কোভিডের সময় এবং তারপরে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টির ওপর খেয়াল রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে এবং উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এই নিয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ুয়াদের শারীরিক সুস্থতা, খেলাধুলা, স্বাস্থ্য, মানসিক সুস্থতার প্রচারের জন্য নির্দেশিকাও জারি করেছে ইউজিসি। তিনি আরও জানান, শিক্ষাগত চাপ কমানোর জন্য মন্ত্রণালয় পিয়ার অ্যাসিস্টেড লার্নিং, শিক্ষার্থীদের জন্য আঞ্চলিক ভাষায় কারিগরি শিক্ষা প্রবর্তনের মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলির সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রক। যাতে আত্মহত্যার সম্ভাব্য কারণগুলিকে মোকাবিলা করা যায়। এবং আগেভাগেই তা সনাক্ত করে তা প্রতিরোধ করা যায়।