যুদ্ধের কারণে প্রায় কয়েক হাজার ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়াকে ইউক্রেন থেকে দেশে ফিরতে হয়েছিল। এই আবহে তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। আর তার প্রেক্ষিতে এবার শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইল যে, ইউক্রেন ফেরত কতজন পড়ুয়া ‘অ্যাকাডেমিক মোবিলিটি’ প্রকল্পের অধীনে অন্য দেশ থেকে তাঁদের পড়াশোনা শেষ করতে চলেছেন।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের ভারতে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্র। কেন্দ্রের বক্তব্য ছিল, ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের ভারতে ভর্তি করলে দেশের শিক্ষ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। এই আবহে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিক্রম নাথের একটি বেঞ্চ কেন্দ্রের পক্ষে উপস্থিত অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বরিয়া ভাটিকে একটি হলফনামা দাখিল করতে বলেন। হলফানামায় জানতে চাওয়া হয়েছে যে, ইউক্রেন ফেরত কতজন পড়ুয়াকে তৃতীয় দেশে পড়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে এবং কীভাবে এই প্রকল্পটি এগিয়ে চলেছে। এই গোটা প্রক্রিয়ার বিবরণ উল্লেখ করতে বলা হয়েছে সেই হলফনামায়।
এর আগে ভাটি একটি হলফনামা পেশ করে দাবি করেছিলেন যে বিদেশ মন্ত্রক এবং ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের সাহায্যে ‘অ্যাকাডেমিক মোবিলিটি’ প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। গত ৬ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল জানিয়ে দিয়েছিল যে তৃতীয় দেশ থেকে পড়াশোনা শেষ করা মেডিক্যাল পড়ুয়াদের গ্রহণ করা হবে দেশে। অবশ্য ইউক্রেনের যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই পড়ুয়া পড়তেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন লাগবে এর জন্য।
এদিকে মামলাকারী পড়ুয়াদের দাবি, তাঁরা ইউক্রেনে যেই সেমেস্টারে পড়তেন, সেই সেমেস্টারে ভারতেই তাঁদের ভর্তি নেওয়া হোক। পড়ুয়াদের পক্ষের আইনজীবী অজিত সিনহা বলেন, ‘এই পড়ুয়াদের কোনও দোষ নেই, তাও তাঁরা ভুগছেন।’ যদিও এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম বেঞ্চ বলেছে যে এই সমস্ত সমস্যাগুলির সমাধানসূত্র দিতে পারেন বিশেষজ্ঞরা। আদালত এতে কিছু করতে পারে না। কারণ দেশে চিকিৎসা শিক্ষা এনএমসি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই পড়ুয়াদের ভর্তি নিয়ে কেন্দ্রকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে আবেদনকারী পড়ুয়াদের পক্ষের আইনজীবীদের দাবি, দেশের ১২টি রাজ্য এই পড়ুয়াদের গ্রহণ করতে রাজি রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সরকার পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য, এই রাজ্যগুলির মেডিক্যাল কলেজে পঠনরত পড়ুয়ারা নিট পাশ করেছেন। এই আবহে সেখানে যদি ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা মাঝ সেশনে ভর্তি হন, তাতে গোটা দেশের মেডিক্যাল শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।