উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরের পর এবার দিল্লি। একটি সরকারি স্কুলের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ইসলাম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। মুসলিম ছাত্রদের ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এর পাশাপাশি শিক্ষিকার অপসারণের দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের মুসলিম পড়ুয়াদের অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন: ছাত্রীর সঙ্গে নাচলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা, ভাইরাল ভিডিয়ো
ঘটনাটি পূর্ব দিল্লির গান্ধী নগরের একটি সরকারি স্কুলে ঘটেছে। অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম হেমা গুলাটি। ওই শিক্ষিকা ক্লাসে উপস্থিত মুসলিম পড়ুয়াদের সামনে ইসলাম ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি গত সপ্তাহের। এক ছাত্রের মা জানান, এমন ঘটনা সামনে আসার পর স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে অন্য শিক্ষকরাও একই ধরনের মন্তব্য করবেন। তিনি বলেন, একজন শিক্ষকের কারও ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর কথা বলা উচিত নয়। শিক্ষকদের এই ধরনের বক্তব্য স্কুলের শিশুদের মনেও ভুল চিন্তাভাবনার জন্ম দেবে, যা শিশুদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে পারে।
অন্যদিকে, বিষয়টি জানতে পেরে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন গান্ধী নগরের বিধায়ক অনিল কুমার বাজপেয়ী। তিনি শিক্ষকের বক্তব্যের নিন্দা করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, তারা অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।এক ছাত্রের অভিযোগ, বুধবার সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেন ওই শিক্ষিকা। অভিযোগ, হেমা গুলাটি মুসলিম পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘দেশভাগের সময় তোমরা কেন পাকিস্তানে যাওনি? কেন তোমরা ভারতে থেকে গেছ? স্বাধীনতা সংগ্রামে তোমাদের কোনও অবদান নেই।’
পুলিশের ডিসিপি (শাহাদারা) রোহিত মীনা বলেছেন, ‘আমরা স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। আমরা যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি।’ এছাড়াও, যে দু-তিনজন ছাত্র অভিযোগ করেছে তাদের সবাইকে কাউন্সেলিং করা হবে বলে তিনি জানান।একজন মহিলা অভিভাবক জানান, তার দুই সন্তান এই স্কুলে পড়ে। তিনি বলেন, ‘এই শিক্ষিকাকে শাস্তি না দিলে অন্যরা উৎসাহিত হবে। যে শিক্ষকের এই ধরনের মনোভাব তাঁকে রেখে কোনও লাভ নেই। আমাদের দাবি, ওই শিক্ষককে স্কুল থেকে অপসারণ করতে হবে। তাঁকে কোনও স্কুলে পড়াতে দেওয়া যাবে না।’
শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৪এ, ২৯৫ এ, ২৯৮ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ডিসিপি রোহিত মীনা জানিয়েছেন, ‘তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং আমরা সমস্ত দিক থেকে মামলাটির তদন্ত করছি।’ এদিকে, দিল্লি সরকার এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এছাড়াও, ধর্ম, বর্ণ, অঞ্চল বা ভাষার ভিত্তিতে বৈষম্য প্রতিরোধ করার জন্য সমস্ত স্কুল শিক্ষক এবং অধ্যক্ষদের নির্দেশিকা জারি করা হচ্ছে। তবে অভিভাবকদের দাবি, অবিলম্বে ওই শিক্ষিকাকে স্কুল থেকে অপসারণ করতে হবে।