‘অত্যাচারী’ বসকে শায়েস্তা করতে ‘হানিট্র্যাপে’র ফাঁদে ফেলল সংস্থার দুই কর্মী। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে ওই দুই কর্মী তিন মাস ধরে তাদের বসের জীবন বিপর্যস্ত করে তোলে। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে পুলিশকে অভিযোগ জানান বস। পুলিশের তদন্তেই দুজনের খোঁজ মেলে।
পুলিশ জানিয়েছে, তিন মাস আগে সংস্থার এক মহিলা কর্মী চাকরি ছাড়েন। যিনি বসের ‘অপমান’ সহ্য করতে পারছিলেন না। কতটা সেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের বসে। তিনি সংস্থার অন্য এক কর্মীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বসকে শায়েস্তা করার সিদ্ধান্ত নেন। তিন মাস আগে, প্রীতি এবং অনীশ (উভয় নাম পরিবর্তিত), হাত মেলায় এবং বসকে ‘হানিট্র্যাপে’ ফেলে এবং ব্ল্যাকমেইল করে তাদের উপর হওয়া অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিন মাস নির্ঘুম রাতে বস সমীর গুপ্তার (নাম পরিবর্তিত)। অবশেষে সহ্য করতে না পেরে সাইবার ক্রাইম পুলিশের কাছে যান এবং ১০ দিন আগে তিনি একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে পুলিশ এই দুজনকে খুঁজে বের করেছে। যাদের অভিযোগ, গুপ্তা পেশাগত কারণে তাঁদের নিয়মিত তিরস্কার ও উপহাস করত।
পুলিশ জানিয়েছে, ‘প্রীতি তাঁকে একটি পাঠ শেখানো এবং তাঁর জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই মতো তিনি এবং অনীশ মিলে মহিলার নাম দিয়ে একটি জাল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছিলেন এবং তিন মাস আগে তাঁরা গুপ্তার সঙ্গে চ্যাট শুরু করেছিলেন।’
দু’জনেই অ্যাকাউন্ট থেকে যৌন বার্তা পাঠাতে শুরু করে। সমীর গুপ্তা ভেবেছিলেন একজন মহিলা তার সঙ্গে চ্যাট করছেন। একটি ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা কিছু নগ্ন ছবিও পাঠায় তাঁরা। গুপ্তা তাদের ফাঁদে পড়ে এবং দুজনের দ্বারা পরিচালিত অ্যাকাউন্টে তাঁর নগ্ন ছবি পাঠান। তারপর এই অ্যাকাউন্ট থেকে তার আর কোনও মেসেজ আসেনি।
কিছু দিন পর, তারা গুপ্তাকে ইমেইল তাঁর নগ্ন ছবি এবং তাদের যৌন চ্যাটের স্ক্রিনশট পাঠায়। গুপ্ত আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কারণ তিনি জানেন না কে তাঁকে ফাঁদে ফেলেছে। সেপ্টেম্বরে, সংস্থা এইচআর বিভাগে (মানব সম্পদ) অনুরূপ একটি ইমেল পাঠানো হয়েছিল।
কিন্তু এতেই থেমে থাকেননি দুজনে। তাঁরা গুপ্তার স্ত্রীর কাছে ছবি এবং চ্যাট মেল করে এবং স্পিডপোস্টের মাধ্যমে সে যে অফিসে কাজ করে সেখানে ছবির একটি প্রিন্টআউট পাঠায়।
নভেম্বরের শেষ দিকে গুপ্তা সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত নেন। পুলিশ আইপি অ্যাড্রেস ট্র্যাক করে দুজনকে ধরে ফেলে।
এসিপি (সাইবার ক্রাইম), ভাদোদরা হার্দিক মাকাদিয়া জানান, ‘যেহেতু এটি কর্পোরেট শত্রুতা সংক্রান্ত একটি মামলা তাই আমরা প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি।এই দুজনকে তাদের বিবৃতি রেকর্ড করার জন্য সিআরপিসি ৪১(এ) এর অধীনে নোটিশ জারি করা হয়েছিল কিন্তু অভিযোগকারী মামলাটি আরও এগিয়ে নিতে আগ্রহী নন।