দু'দশক আগেও মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি নেতৃত্বদায়ী ভূমিকায় ছিলেন। রাজ্যে বিজেপির জয়ে তিনি ছিলেন অন্যতম কাণ্ডারী। কিন্তু দু'দশক পর ছবিটা বদল গিয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আর সপ্তাহ খানেক বাকি। দলের তরফে 'স্টার' প্রচারকদের ৪০ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকায় নেই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতী।
গত ৫ বছর ধরেই রাজনীতির মূল স্রোতে নেই তিনি। ২০১৮ নির্বাচনেও স্টার প্রচারকদের তালিকায় ছিলেন উমা ভারতী। কিন্তু এবার তাঁকে সেই তালিকায় রাখেনি দল।
তিনি হিমালয়ের যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। এক্সে (সাবেক টুইটার) সেই বার্তা জানিয়েছেন তিনি। তবে কি অভিমানে হিমালয়মুখী হচ্ছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী? উমা ভারতী অবশ্য নিজে জানিয়েছেন,'রামরাজার সরকার' যাতে ক্ষমতায় আসে তাই তিনি হিমালয়ে গিয়ে প্রার্থণা করবেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'প্রথমে আমি আমার জন্মস্থান টিকমগড় জেলায় দুন্ডায় যাব। সেখানে আমি কূল দেবতাকে পুজো দেব। তার পর আমি হিমালয়ের উদ্দেশে রওনা দেব। সেখানে আমি রামরাজ সরকার যাতে ক্ষমতায় আসে তার জন্য প্রার্থণা করব।'
রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে নিজের দলের সরকারের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছিলেন উমা ভারতী। তিনি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং বিজেপিকে। উমা লিখেছেন, 'আদর্শ আবগারি নীতি এনে শিবরাজজি অসাধারণ কাজ রয়েছেন। তাঁর সাড়ে তিন বছরের সময়কালে নানা জন কল্যাণমূলক কাজ করেছেন।'
তিনি আরও লিখেছেন,' মধ্যপ্রদেশে আমাদের দলের ইস্তাহার প্রকাশিত হবে। যার ভিত্তিতে দল ভোট চাইবে। আমার কঠিন পরিশ্রম করব এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থণা করব যাতে আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসে। আমার এবং জনগণের অপূর্ণ প্রত্যাশাগুলোকে পূরণ করে।'
তাঁর লেখায় অপূর্ণ প্রত্যাশার তালিকাও দিয়েছেন উমা ভারতী। তিনি লিখেছেন, ' ২০১৭ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হলেও কেন-বেতওয়া নদী সংযোগের কাজ এখনও শুরু হয়নি। সেই কাজ শুরু করা। গো-সংরক্ষণ এবং গো-রক্ষা নিয়ে উদ্যোগ এখনও আশানুরূপ জায়গায় পৌঁছয়নি।'
২০০৩ সালে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পাঁচ 'জি' প্রকল্প শুরু করেছিলেন উমা ভারতী, জল, জঙ্গল, জনোয়ার এবং জমিন। তিনি লেখেছেন, 'এই পাঁচ 'জি' প্রকল্পের কাজ এখন অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে।'
২০০৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ভোজশালা মন্দির বিতর্ক ভোটের ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। বিজেপি এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দাবি করে, ধারের কামাল মওলা মসজিদ আসলে ভোজশালা, ভোজ রাজাদের তৈরি সরস্বতীর মন্দির। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতের নির্দেশের প্রতি মঙ্গলবার এবং বসন্ত পঞ্চমীর দিন মসজিদের দরজা খুলে দেওয়া হয় হিন্দুদের পুজো দেবার জন্য। সেই সময় বিজেপি আশ্বাস দেয়, লন্ডনের মিউজিয়াম থেকে সরস্বতী মূর্তি ফিরিয়ে আনবে। উমা ভারতী লিখেছে, 'রাজ্য আমাদের সরকার থাকা সত্বেও লন্ডনের মিউজিয়াম থেকে দেবী মূতি মন্দিরে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।'
তিনি লিখেছেন,'মাঝে দেড় বছর ছাড়া ২০০৩ থেকে আমাদের সরকার ক্ষমতায় রয়েছে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাপূরণ করার জন্য। আমি কিছুদিন কেদার-বদরীতে গিয়ে ভাবব আমাদের স্বপ্ন কতটা অপূর্ণ থেকে গিয়েছে। '