মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেসের বিধায়ক নিলয় দাগা ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠল। আয়কর দফতরের হানায় অভিযুক্তদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা। আয়কর দফতরের এক আধিকারিক এক বিবৃতিতে জানান, বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার চার দিনে মোট ২২টি জায়গায় হানা দিয়ে, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করেছে আয়কর দফতর। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, আয়কর দফতরের আধিকারিকরা নিলয় দাগার বেতুলের সোয়া তেল মিল, একটি বেসরকারি স্কুল, কোঠি বাজারের বাসস্থান, পর্সোদা, সিডের গুদাম ছাড়াও বেতুল এবং সাতনার উৎপাদনকারী দফতরে হানা দেয়। পাশাপাশি তল্লাশি চালানো হয় মহারাষ্ট্রের সোলাপুর আর কলকাতার অফিসেও।
আয়কর দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘গোপন সূত্রে আমরা খবর পাই যে, বিভিন্ন সংস্থা গঠন করে বেনামে অর্থ, কোম্পানিগুলির অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে। খবরটি সঠিক মিলেছিল এবং তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণে আয়কর তছরুপের হদিশ মিলেছে।’
আয়কর দফতরের এক প্রেস বিবৃতি সূত্রে খবর, তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বেনামী ৮ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি সোলাপুর থেকে বিভিন্ন দেশের বিদেশি মুদ্রা মিলিয়ে ৪৪ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তল্লাশি চলাকালীন বেতুল ও সোলাপুরে ৯টি ব্যাংক লকারের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। কলকাতার সংস্থাগুলি থেকে দাগা গ্রুপের বেনামী ২৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচার নথি উদ্ধার হয়েছে।
আয়কর দফতর আধিকারিকরা আরও বেনামী ৯০ কোটি টাকার নথিপত্র কলকাতার সংস্থাগুলি থেকে উদ্ধার করেছে। আয়কর দফতরের আধিকারিকরা লক্ষ্য করেন, এই কোম্পানিগুলির কোনটাই সচল নয়। সংস্থার নথিপত্রে দেওয়া কোম্পানির ঠিকানাগুলি ও তাদের ডিরেক্টরদের পরিচয়পত্র উল্লেখ করেনি দাগা গ্রুপ। এর মধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানি মিনিস্ট্রি অফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স থেকে গত বছরই আটকে দেওয়া হয়েছিল। তদন্তে আধিকারিকরা আরও জানতে পারেন, এই সংস্থা ৫২ কোটি টাকার ভুয়ো ক্ষতি দেখিছে। আর সংস্থার সমস্ত লাভ লুকানো হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার গঠন কর্মচারীদের নামে করে এই লেনদেন করা হয়েছে। সেখানে সংস্থার প্রকৃত ব্যবসার কোনও তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এই গ্রুপ অন্যায়ভাবে ২৭ কোটি টাকার সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রয়ের দীর্ঘমেয়াদী পুঁজি দেখিয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, এই গ্রুপের কলকাতার সংস্থাগুলির ডিরেক্টরদের নামে এই শেয়ার বিক্রির কোনও অস্তিত্ব নেই সবটাই ভুয়ো। আয়কর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন ধরনের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যেগুলি চ্যাটের মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকার বেনামী অর্থ হাওয়ালার মাধ্যমে লেনদেন করা হয়েছে। এই সমস্ত তথ্য সংস্থার ল্যাপটপ, হার্ড ড্রাইভ, পেনড্রাইভের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে, যেগুলি আয়কর দফতর বাজেয়াপ্ত করেছে। সেক্ষেত্রে মোট অপ্রকাশিত অর্থের পরিমাণ ৪৫০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। এই বিষয়ে নিলয় দাগার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। সোমবার তিনি ভোপালের বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে যোগদান করেছেন বলে খবর।