তাঁকে বিশ্ব, মার্কিন কূটনীতির পাওয়ার হাউস হিসাবে চিনত। সেই তাবড় কূটনীতিবিদ তথা আমেরিকার প্রাক্তন সেক্রেটারি অফ স্টেট হেনরি কিসিঞ্জার প্রয়াত। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। নোবেল পুরস্কার জয়ী কিসিঞ্জারের নোবেল প্রাপ্তি নিয়ে ছিল বিস্তর বিতর্ক। তাঁর প্রয়াণে স্বভাবতই শোকের ছায়া আমেরিকার কূটনৈতিক মহলে।
এককালে মার্কিন মুলুকের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার ছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। ছিলেন আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট। কার্যত মার্কিন কূটনীতির অন্যতম কিংবদন্তী ছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। আমেরিকার কানেক্টিকাটে তাঁর বাসভবনে এদিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই প্রথিতযশা মার্কিনি কূটনীতিবিদ। জার্মানি বংশোদ্ভূত এই কূটনৈতিক ব্যক্তিত্ব, নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন ১৯৭৩ সালে। তিনি ভিয়েৎনামের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতির সমঝোতার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। এরপরই তাঁকে তুলে দেওয়া হয় নোবেল পুরস্কার। বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসাবেও তাঁর বড় ভূমিকা রয়েছে। আমেরিকায় রিচার্জ নিক্সন ও জিরাল্ড ফোর্ডের সময়ের একজন তাবড় কূটনীতিবিদ ছিলেন হেনরি। হার্ভর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৫১ সালে পাশ করেছিলেন এমএ। স্নাতোকোত্তরের পর তিনি ১৯৫৪ সালে তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন করেন তাঁর পিএইচডি ডিগ্রি।
( Israel Hamas War Update: ইজরায়েল-হামাস সংঘর্ষ বিরতির মেয়াদ বাড়ল আরও ২ দিন, লক্ষ্য আরও বন্দির মুক্তি)
এদিকে, কীসের জেরে কিসিঞ্জারের মৃত্যু হয়েছিল, তা নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্টে কিছু জানা যায়নি। জানা গিয়েছে, তাঁর প্রয়াণে অন্ত্যেষ্টি প্রক্রিয়ায় শুধু তাঁর পরিবার ও শুভানুধ্যায়ী বন্ধুরা থাকছেন। পরে জনসমক্ষে তাঁর স্মরণসভা আয়োজিত হবে। এক সাধারণ স্কুল শিক্ষক ও তাঁর গহবধূ স্ত্রীর ঘরে জন্মেছিলেন কিসিঞ্জার। জার্মানির বেভারিয়ায় জন্মানো এই কূটনীতিবিদ ছিলেন ভালো খেলোয়ার। ছোট থেকেই খেলার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ভিয়েৎনামের সঙ্গে সংঘর্ষ বিরতির সমঝোতার মার্কিনি কূটনৈতিক নায়ক কিসিঞ্জারের ছোটবেলা কেটেছে নাৎসী জার্মানিতে। সেই সময় হিটলার ছিলেন জার্মানির চ্যান্সেলার। অত্যাচারী সর্বাধিনায়ক হিটলারের জমানায় কিসিঞ্জার পরিবার ব্যাপকভাবে অত্যাচারিত হয়েছিল। ৯ বছর বয়সের সেই অত্যাচারের কথা আজ জীবনভর মনে রেখেছিলেন কিসিঞ্জার। অত্যাচারিত জার্মানির সেই ভূমিপুত্র, পরে বিশ্ব কূটনীতির অন্যতম নাম হয়ে ওঠেন। সেই কিসিঞ্জারের প্রয়াণে শোকের ছায়া বিশ্বের বহু কূটনৈতিক মহলে।