বিদেশে বেড়াতে যাবেন? ট্রাভেল কোম্পানিকে টাকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে? কিন্তু হঠাৎ শুনলেন ভিসা বাতিল হয়েছে। ট্রাভেল কোম্পানির কাছে টাকা ফেরত চাইলেন। কিন্তু তারা কোনও দায়ই নিল না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এমনটা হয়ে থাকে। তবে ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল ভদোদরা উপভোক্তা কমিশন। দেশের এক শীর্ষ অনলাইন ভ্রমণ সংস্থাকে পর্যটকের ভিসা বাতিলের জন্য দায়ী করে তাঁকে বুকিংয়ের সমস্ত টাকা ফেরত দিতে বলে উপভোক্তা কমিশন। এই ধরনের নির্দেশ কার্যত নজিরবিহীন বলে মনে করা হচ্ছে।
ভদোদরার জেলা গ্রাহক বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন, চিন্তন ঠাকুরের দায়ের করা ছয় বছরের একটি পুরনো মামলার ভিত্তিতে এই রায় দিয়েছে। চিন্তন ২০১৭ সালে জানুয়ারিতে একটি কোম্পানির মাধ্যমে ইউরোপে ছুটি কাটানোনোর জন্য বুকিং করেছিলেন। চিন্তন প্রথমে জানুয়ারি মাসে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। পরে এপ্রিল মাসে দিয়েছিলেন ১ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা দেন।
পড়ুন। যারা চাইল্ড পর্নোগ্রাফি দেখছে তাদের শাস্তি নয় কাউন্সেলিং করুন, পরামর্শ মাদ্রাজ হাইকোর্টের
ঠাকুরের দায়ের করা ছয় বছরের এক পুরনো মামলায় জানা যায়, এই খরচের মধ্যে ভিসা সহায়তা ফি এবং ভিসা সহায়তা পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
রায়ে কমিশন জানিয়েছে, অভিযোগ দায়ের করার দিন থেকে এবং কোম্পানিটিকে ভুয়ো নথির জন্য দায়ি করে ৮ শতাংশ সুদ-সহ, ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ঠাকুর অভিযোগে জানিয়েছেন, ট্র্যাভেল পোর্টালের এজেন্ট তাঁর সফরের জন্য ভিসার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। ঠাকর এবং তার পরিবারের তিন সদস্য ভিসার ইন্টারভিউয়ের জন্য ইতালির কনস্যুলেট জেনারেলের অফিসে গিয়েছিলেন।
ঠাকরের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন 'জাগ্রত নাগরিক'-এর পি ভি মুরঝানি বলেন, ' ভ্রমণের তারিখ পরিবর্তন করে ২৪ মে, ২০১৭ করতে চেয়েছিলেন এবং তিনি এ নিয়ে কোম্পানির পরামর্শও নিয়েছিলেন। কোম্পানি তাঁকে জানায়, তিনি তা করতে পারেন। এরপর তাঁকে অতিরিক্ত ১ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা দিতে বলা হয়।
এবার ঠাকুর অতিরিক্ত ১ লক্ষ ৮৪ হাজার আবার ভিসার জন্য আবেদন করেন। তিনি এবং তাঁর পরিবার আবার মুম্বইয়ে ইতালির কনস্যুলেট জেনারেলের অফিসে সাক্ষাৎকারের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু ভ্রমণ সংস্থাটি বিমানের টিকিট এবং হোটেল বুকিংয়ের জন্য যথাযথ নথি জমা দেয়নি বলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। জানা যায়, 'ট্রাভেল ফার্মের চিঠি নির্ভরযোগ্য না হওয়ায় ভিসা বাতিল করা হয়।
তিনি ভ্রমণ করতে পারেননি এবং কোম্পানিকে তিনি পুরো সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ফেরত দিতে বলেছিলেন। কিন্তু, সংস্থাটি ভিসা প্রত্যাখ্যানের জন্য দায়ী নয় বলে জানায়। এরপর ২০১৮ সালের মে মাসে 'জাগ্রত নাগরিক'-এর মাধ্যমে গ্রাহক ফোরামে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ঠাকুর।
ভ্রমণ সংস্থাটি যুক্তি দিয়েছিল, অভিযোগকারী তাদের গ্রাহক নয় এবং চুক্তিটি পরিষেবার সংজ্ঞার অধীনে আসে না। আবেদনকারীর ভিসা বাতিল হয়ে গেছে এবং এটি দূতাবাসের সিন্ধান্তের উপর নির্ভর করে। সংস্থাটি ভিসা অনুমোদনের পরিষেবা দেয় না এবং এর ভূমিকা কেবল আবেদনকারীকে ভিসা পাওয়ার সুবিধার্থে, এবং যদি তা প্রত্যাখ্যাত হয়, তবে এটি তাদের ভুল নয়।
ফোরাম বলে, ট্র্যাভেল ফার্মটি এপ্রিল ২০১৭ সালে ইতালির কনস্যুলেট জেনারেলের কাছে আবেদনকারীর (হোটেল) থাকার তারিখ সম্পর্কে জমা দেওয়া চিঠিটি নির্ভরযোগ্য ছিল না এবং তাই ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।