আর্থিক তছরুপের মামলায় কয়েকদিন আগেই চিনা মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা ভিভোর তিন আধিকারিককে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তবে সেই মামলায় গ্রেফতার তিন ভিভো কর্তাকেই শনিবার জামিন দিল দিল্লির একটি আদালত। গ্রেফতারি প্রসঙ্গে আদালত স্পষ্ট বলে, 'বেআইনি ভাবে হেফাজতে রাখা হয়েছিল এই তিন ভিভো কর্তাকে।' আদালত পর্যবেক্ষণ করে, গ্রেফতারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিন ভিভো কর্তাকে আদালতের পেশ করা হয়নি। উল্লেখ্য, এই তিন ভিভো কর্তাকে গ্রেফতারির পর ২৩ ডিসেম্বর পেশ করা হয়েছিল আদালতে। তবে তাদের দাবি ছিল, ২১ ডিসেম্বর তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, ২২ ডিসেম্বর নয়। এই আবহে তাঁদের যুক্তি মেনে নিয়ে আপাতত জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে চিনা নাগরিক এবং ভিভো-ইন্ডিয়ার অন্তর্বর্তী সিইও হং জুকুয়ান ওরফে টেরি, চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) হরিন্দর দাহিয়া এবং পরামর্শক হেমন্ত মুঞ্জালকে আগামী ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন ইডি অফিসে হাজিরা দিতে হবে। (আরও পড়ুন: জালিয়াতির অভিযোগের মাঝে ১ লাখ শিক্ষকের রি-ভেরিফিকেশনের নির্দেশ শিক্ষা দফতরের)
এর আগে ধৃত ভিভো কর্তাদের কনসুলার সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলেছিল চিন। চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, সংস্থার ভারতীয় ও বিদেশি কর্মীদের মধ্যে যেন কোনও ফারাক করে না। এই আবহে সবাইকে 'কনসুলার প্রোটেকশন' বা যাবতীয় সহযোগিতা করবে চিনে দূতাবাস। ভারতে চিনের দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলির আইন মেনেই এই সুরক্ষা দেওয়া হবে বলে জানানো হয় বেজিংয়ের তরফ থেকে।
গত বছর ৫ জুলাই ভিভো মোবাইলস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং সেই মোবাইল প্রস্তুতকারক কোম্পানির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ২৩টি সংস্থায় অভিযান চালিয়েছিল ইডি। সেইসময় কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল যে ভারতে যাতে কর দিতে না হয়, সেজন্য বেআইনিভাবে চিনে ৬২,৪৭৬ কোটি টাকা পাচার করে দিয়েছে ভিভো ইন্ডিয়া।
এদিকে রাজ্যসভায় সম্প্রতি পেশ হওয়া সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভিভো ২৯২৩.২৫ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছে। এর মধ্যে রফতানি শুল্ক বাবদ ২,৮৭৫ কোটি টাকা এবং জিএসটি বাবদ ৪৮.২৫ কোটি টাকা সরকারকে দেয়নি ভিভো। শুধুমাত্র ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে রফতানি শুল্ক বাবদ ২২১৭ কোটি টাকার কর ফাঁকি দেয় ভিভো। এর মধ্যে থেকে ৭২ কোটি টাকা পুনরুদ্ধার করেছে সরকার। এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভিভো আরও ৬৫৮ কোটির রফতানি শুল্ক জমা করেনি সরকারের খাতায়।