নিজের জীবন দিয়ে কয়েক'শ গ্রামবাসীর প্রাণ বাঁচালেন এক বায়ুসেনা জওয়ান। দেরাদুনের বাসিন্দা ৩৩ বছর বয়সি অভিমন্যু রাই স্কোয়াড্রন লিডার ছিলেন। গত মাসে হায়দরাবাদ এয়ার ফোর্স ট্রেনিং একাডেমি থেকে একটি ট্রেনার জেট নিয়ে আকাশে ওড়েন। ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা যায়। বিমানটি একটি গ্রামের উপর ভেঙে পড়তে পারত। কিন্তু তিনি তা হতে না দিয়ে বিমানটিকে অন্যত্র নিয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে জেট বিমানটি ভেঙে পড়ে। মারা যান অভিমন্যু রাই।
বায়ু সেনার আধিকারিকরা জানিয়েছে, জেট বিমানটি প্রযক্তিগত ত্রুটি দেখা দেওয়ার পর লাফ দিয়ে বের হতে পারতেন অভিমন্যু। কিন্তু বিমানটি নিকটবর্তী একটি গ্রামে আছড়ে পড়তো। এতে প্রাণ যেত কয়েকশ নিরীহ গ্রামবাসীর। তা হতে না দিয়ে বিমানটিকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার অভিমন্যু রাই।
অভিমন্যুর স্ত্রী অক্ষতা রাইও বায়ুসেনার একজন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার। শুধু তাই নয় তাঁর পুরো পরিবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত। অভিমন্যুর বাবা বিমানবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং তার শ্বশুর ভারতীয় নৌবাহিনীতে একজন কর্মরত ভাইস-এডমিরাল।
(পড়তে পারেন। বোম, মিসাইল সবই ফেলতে পারবে দেশীয় ড্রোন, বিরাট সাফল্যের পথে ভারত)
হায়দরাবাদে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর। সময় সহকর্মীরা জানান, কী ভাবে গ্রামবাসীদের বাঁচানোর জন্য বিমানটির মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। অভিমন্যুর বাবা অমিতাভ রাই জানান, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী-সহ ভিভিআইপিদের বিমান চালানোর দায়িত্ব থাকা নয়জন পাইলটের একজন ছিলেন অভিমন্যু। তাঁর বাবার কথায়, ' অভিমন্যু তাঁর নয় বছরের মেয়াদে তিনি ছয়টি ভিন্ন বিমান উড়িয়েছেন যা কারও পক্ষে সহজ নয়। তিনি তার ব্যাচমেট এবং জুনিয়রদের ভালবাসতেন।
অভিমন্যুর মা চিত্রলেখা রাই বলেন, 'গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল সে, না হলে সে সহজেই বিমান থেকে বের হয়ে যেতে পারত। নিজের নামকে সার্থক করেছে সে।'
তিনি আরও জানিয়েছেন, অনুপ্রেরণামূলক সিনেমা দেখতেই পছন্দ করতেন অভিমন্যু। ঘটনার আগের দিন রাতেই তিনি 'শ্যাম বাহাদুর' ছবিটি দেখেছিলেন।