ছেলের বিধবাকে শ্বশুর শাশুড়ির দেওয়া উপহার ফেরত দিতে বলা যাবে না। একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ করে সিনিয়র সিটিজেন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ বাতিল করেছে বম্বে হাইকোর্ট। ছেলের মৃত্যুর আগে কিছু উপহার দিয়েছিলেন বিধবার শ্বশুর শাশুড়ি। সেই উপহার শ্বশুর শাশুড়িকে ফেরত দিতে বলেছিল নিম্ন আদালত। সেই সংক্রান্ত মামলাতেই এমন পর্যবেক্ষণ বম্বে হাইকোর্টের।
আরও পড়ুন: সহবাসের পর বাবা-মায়ের আপত্তিতে বিয়ে না করতে পারলে সেটা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে না-HC
বিধবার শ্বশুর শাশুড়ির যে মামলা সেটি রক্ষণাবেক্ষণ এবং যত্ন নিয়ে নয়, বরং অংশীদারিত্ব সংস্থার সম্পত্তির দাবি নিয়ে। তবে এবিষয়ে ট্রাইবুন্যালের এখতিয়ার না থাকায় নির্দেশ খারিজ করেছে হাইকোর্ট।মামলার বয়ান অনুযায়ী, বৃদ্ধ দম্পতি তাদের বড় ছেলেকে তাদের ফার্মে অংশীদার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। বিয়ের পর ছেলে ও স্ত্রী মিলে দুটি কোম্পানি গড়ে তোলেন। ছেলে অংশীদারিত্ব সংস্থার আয় থেকে ১৮টি সম্পত্তি কিনেছিলেন। পরে একটি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য সেগুলি বন্ধক রেখেছিলেন। পরে তার বাবা-মা তাকে চেম্বুর এবং বাইকুল্লায় ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন। এরইমধ্যে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ছেলে মারা যান। তবে ছেলের মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রী সম্পত্তির ভাগ শ্বশুর শাশুড়িকে দিতে অস্বীকার করেন। তার প্রেক্ষিতে বিধবার শ্বশুর শাশুড়ি ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ট্রাইব্যুনাল উপহারের দলিল বাতিল করে এবং বিধবাকে তাদের সম্পত্তির দখল দেওয়ার নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ারও নির্দেশ দেয়।
হাইকোর্টের মতে, ট্রাইব্যুনালের কোনও অংশীদারের অধিকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই। তাছাড়া পুত্রবধূর কাছ থেকে ভরণপোষণ চাওয়া যাবে না। কারণ তিনি বাবা-মা এবং প্রবীণ নাগরিক আইনের রক্ষণাবেক্ষণ এবং কল্যাণের অধীনে ‘সন্তান’-এর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত নন। তবে বিধবার শাশুড়ির আইনজীবী জানান, বর্তমানে তাঁর মক্কেলের থাকার জায়গা নেই। তিনি তার অন্য সন্তানের দয়ায় বেঁচে আছেন। তাছাড়া জানুয়ারি পর্যন্ত একটি ব্যাঙ্কের বকেয়া ছিল ৯.৫ কোটি টাকা। তাই মানবিকতার খাতিরে বিধবা যাতে তাঁর শাশুড়িকে এম জীবিত অবস্থায় ভরণপোষণ দিতে রাজি হন সেবিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছে হাইকোর্ট।