বিভিন্ন জাতের আমের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। সেগুলি জানা থাকলেই বুঝতে পারবেন, কোন জাতের আম খাচ্ছেন?
1/13দাপিয়ে গরম পড়েছে। এর অন্য একটি অর্থ হল আমের মরশুম এসে গিয়েছে। কিন্তু শুধু তো গপগপ করে আম খেলেই হল না, কোন আমের কেমন স্বাদ, কেমন তার গন্ধ— সে সম্পর্কে ধ্যানধারণা থাকাও দরকার। কারণ তা হলেই আম খাওয়ার মজা বেড়ে যায়।
2/13বাজারে নানা জাতের আম পাওয়া যায়। তার মধ্যে কোনটির গন্ধ ভালো, কোনটির স্বাদ। কোন আমটি আপনি কিনবেন, তা বোঝার জন্য জেনে নেওয়া দরকার কোন জাতের আমেরি কী বৈশিষ্ট্য।
3/13গোলাপখাস: গন্ধের জন্য বিখ্যাত এই আম। গোলাপ ফুলের মতো গন্ধ থাকায় এই নামে ডাকা শুরু হয়। প্রাচীন বাংলার আমগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এর গায়ে গোলাপের রঙের লালচে আভা রয়েছে।
4/13হিমসাগর: মিষ্টতার কারণেই সবচেয়ে জনপ্রিয় এই আম। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাজারে আসতে শুরু করে এটি। দ্রুত শেষ হয়ে যায়। মরশুমের গোড়াতেই শুধু এই আম পাওয়া যায়।
5/13ল্যাংড়া: ল্যাংড়া আম দেখতে কিছুটা গোলাকার ও মসৃণ। এটির নাকটি দেখা যায় নিচের দিকে। এর খোসা খুবই পাতলা। মোঘল আমলে দ্বারভাঙায় এই আম চাষ শুরু হয়। আঠারো শতকে এক ফকির খুব সুস্বাদু এই আমের চাষ করেন। সেই ফকিরের পায়ে সমস্যা ছিল। সেই থেকেই নাকি ওই আমের নাম হয়ে যায় ‘ল্যাংড়া’। এটি পশ্চিমবঙ্গ-সহ সমগ্র উত্তর ভারতে চাষ করা হয়। এই আম পাকার পর কিছুটা হলদে রঙের হয়ে যায়। জুলাই মাসের দিকে এই আম পাকতে শুরু করে এবং বাজারে পাওয়া যায়।
6/13গোপালভোগ: এই আমের গায়ে ছোট ছোট হলুদ দাগ আছে। এই আম পাকার পর হলুদ হয়ে যায়। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পাওয়া যায় এই আম। বাংলাদেশের ইংরেজ বাজারে নরহাট্টার গোপাল নামের এক ব্যক্তি এই আমের চাষ শুরু করেন। সেই থেকে গোপাল চাষির নামে গোপালভোগের উৎপত্তি হয়। এখন পশ্চিমবঙ্গের অনেক জায়গাতেই চাষ করা হয় এই আম।
7/13আম্রপালি: এই আমের নীচের দিক একটু সুঁচালো, উপরে একটু গোল। এই আম মিষ্টি বেশি ও স্বাদেও অন্য আমের থেকে আলাদা। ১৯৭৮ সালে ভারতের আম গবেষকরা দশহরি ও নিলাম— এই দু’টি আমের জাত মিশিয়ে আম্রপালি আমের জাত উদ্ভাবন করেন। এই আমের গাছগুলি আকারে বেশ ছোট।
8/13লক্ষণভোগ: এই আম তুলনামূলক কম মিষ্টি। তাই এটিকে ডায়াবিটিস আমও বলে। কারণ ডায়াবিটিসের রোগীরা এই আম খেতে পারেন।
9/13আশ্বিনা: আশ্বিন মাসে পাকে যে আম তাকে ‘আশ্বিনা’ বলে। আশ্বিনা জাতের আম গাছে থাকে সাধারণত আগস্ট মাস পর্যন্ত। কিছু কিছু এলাকায় সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেও এ আম পাওয়া যায়। একে গুটিও বলে। কাঁচা অবস্থায় এটি খুব টক। কিন্তু পাকলে খুব মিষ্টি।
10/13সিন্দুরি আম: একটা ছোট মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত আম। রঙের কারণে এমন নামকরণ।
11/13চৌসা: শের শাহ এই আমের নামকরণ করেন। গোটা ভারতেরই অত্যন্ত জনপ্রিয় আম এটি।
12/13দশেরি: দশেরি আম হল এক ধরনের চাষ করা আম যার উৎসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল ১৮ শতকে লখনউ জেলার কাকোরির কাছে একটি গ্রামে। এখন এই মিষ্টি এবং সুগন্ধি জাতের আম পাওয়া যায় উত্তর ভারত, দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ, এছাড়াও নেপাল এবং পাকিস্তানে। উত্তরপ্রদেশের মালিহাবাদে সবচেয়ে বেশি এই আমের চাষ হয়। দশেরি আমের বেশ কিছু আঞ্চলিক নাম রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দুসারি, দশেহারি, দুশেরি এবং দুশেহরি। এই আম ছোট থেকে মাঝারি আকারের ফল। এর গড় দৈর্ঘ্য ৯ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয় এবং ভোঁতা, বাঁকা প্রান্ত-সহ একটি প্রসারিত, সোজা ডিম্বাকৃতি আছে। এর ত্বক আধা-পুরু, মসৃণ, খোসাযুক্ত এবং মোমের মতো হয়।
13/13ফজলি: ১৮০০ সালে ফজলি বিবি নামে এক বৃদ্ধা বাস করতেন গৌড়ে। তাঁর উঠোনে ছিল একটি আমগাছ। ওই এলাকার কালেক্টর একবার বৃদ্ধার ঘরের কাছে শিবির করেন। তার আগমনের খবর পেয়ে বৃদ্ধা সেই আম নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি সেই আম খেয়ে খুবই মজা পান। সেই আমের নাম জানতে চান। কিন্তু ইংরেজি না বুঝে শুধু ‘নেম’ শুনেই নিজের নাম বলে দেন ফজলি বিবি। সেই থেকেই এই আমের নাম ‘ফজলি’। পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে পাওয়া যায় এই আম।