আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বুধবার টস করতে নামার সময়েই নজির গড়ে ফেললেন লিটন দাস। প্রথম হিন্দু অধিনায়ক হিসেবে তিনি বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিলেন। সেই সঙ্গে লিটন প্রথম হিন্দু অধিনায়ক হিসেবে ক্রিকেটের সব ফর্ম্যাটেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার নজির গড়লেন। তিনি বাংলাদেশের ১২তম টেস্ট অধিনায়ক হলেন।
এ দিকে প্রায় দু'বছর পর কোনও টেস্ট খেলতে নেমেছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তারা একটিই টেস্ট খেলবে। তবে সেই টেস্টের প্রথম দিনেই ব্যাকফুটে আফগানিস্তান। নাজমুল হোসেন শান্তর দুরন্ত সেঞ্চুরির উপর ভর করে বাংলাদেশ রানের পাহাড় গড়ার পথে। প্রথম দিনের শেষে নিঃসন্দেহে চালকের আসনে বাংলাদেশ।
নাজমুলের ১৪৬, মাহমুদুল হাসান জয়ের ৭৬ রানের ইনিংসে ভর করে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনই ৫ উইকেটে ৩৬২ রানের বড় স্কোর করে ফেলেছে বাংলাদেশ। টপ অর্ডারের গড়ে দেওয়া ভিতে দাঁড়িয়ে মুমিনুল হক বা লিটন দাসরা বড় স্কোর করতে না পারলেও, ভরসা দিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দু'জনে ষষ্ঠ উইকেটে অপরাজিত ৭২ রানের পার্টনারশিপ করে ফেলেছেন। ৪৩ রানে ব্যাটিং করছেন মিরাজ, মুশফিকুর অপরাজিত রয়েছেন ৪১ রানে।
মিরপুরের সবুজ উইকেট নিয়ে আগে থেকেই আলোচনা চলছিল। সঙ্গে গত কয়েক দিন ঢাকায় বেশ ভালো বৃষ্টিও হয়েছে। যে কারণে টস জিতে ফিল্ডিং নেন আফগানিস্তান। আট বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে কোনও টেস্টে টসে জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল কোনও দল। মিরপুরের উইকেট যে পুরোপুরি ব্যাটিং সহায়ক, তা বলা যাবে না। তবে এ দিন রোদ ওঠে। তার উপর অনভিজ্ঞ আফগান বোলারদের বিরুদ্ধে সুবিধে আদায় করে নিতে একেবারেই ভুল করেননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
তবে ম্যাচের শুরুতেই অবশ্য ঝটকা খেয়েছিল বাংলাদেশ। জাতীয় দলের হয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন নিজাত মাসুদ। জাকির হাসানকে ফেরান নিজাত। ৭ বছর পর টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পেলেন কোনও বোলার, বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন ঘটল দ্বিতীয় বার।
দলের ৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় উইকেটে দলের হাল ধরেন মাহমুদুল এবং নাজমুল। তাঁরা দ্বিতীয় উইকেটে ২১২ রান যোগ করেন। এতেই ভিত পোক্ত হয় বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন: ধোনি কি সত্যিই অবসর নিচ্ছেন? CSK-এর আবেগঘন ‘আমার অধিনায়ক’ পোস্ট নতুন জল্পনার জন্ম দিল
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ক্রিজে এসেছিলেন নাজমুল শান্ত। তার পর থেকে শান্ত যেন ওডিআই মেজাজে ব্যাট করতে শুরু করেন। ১১৮ বলে সেঞ্চুরি করেন শান্ত। তাঁর ইনিংসে সাজানো ছিল ১৯টি চারে। লাঞ্চের আগে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন ৫৮ বলে। মাহমুদুল ৭৬ করে আউট হওয়ার কিছুক্ষণ পরে শান্তও ১৪৬ (১৭৫) করে সাজঘরে ফিরে যান। মাঝে মোমিনুল হক মাত্র ১৫ রান করে আউট হয়ে যান।
বাংলাদেশের ২১৮ রানে ২ উইকেট থেকে খুব দ্রুতই ২৯০ রানে ৫ উইকেট পড়ে যায়। ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক লিটন দাসও। তবে ষষ্ঠ উইকেটে ফের জুটি বেঁধেছেন মুশফিকুর রহিম এবং মেহেদি হাসান মিরাজ। মুশফিকুর অপরাজিত রয়েছেন ৪১ রানে। মেহেদি ৪৩ রান করে ক্রিজে রয়েছেন। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে বাংলাদেশকে বড় স্কোরের পথে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব থাকবে তাঁদের হাতেই। প্রথম দিনের শেষে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৬২ রান করেছে। আফগানিস্তানের হয়ে নিজাত মাসুদ ২টি উইকেট নিয়েছেন। জহির খান, আমির হামজা, রহমত শাহ একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এ দিকে ওভার রেটে বেশ পিছিয়ে ছিল আফগানিস্তান। যে কারণে আম্পায়াররা শেষ সেশনে ৩০ মিনিট অতিরিক্ত খেলা চালান। তাতে বাংলাদেশের স্কোরই আরেকটু বেড়েছে। বৃহস্পতিবার ১ ওভার পরই দ্বিতীয় নতুন বল পাবে আফগানরা। তারা নতুন বলে ম্যাচের রং বদলানোর চেষ্টা নিঃসন্দেহে করবে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।