২৩ বছরেই যেন আগুনের গোলা। তাঁর পায়ের জাদুতেই কেঁপে ওঠে বিপক্ষের রক্ষণ। শনিবার বিশ্বকাপের ম্যাচে কিলিয়ান এমবাপের জোড়া গোলেই দুরন্ত জয় ছিনিয়ে নিল ফ্রান্স। ডেনমার্ককে হারিয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা পৌঁছে গেল প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে। সেই সঙ্গে এমবাপেও করে ফেললেন একাধিক নজির।
অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পর দিদিয়ের দেশঁ বলেছিলেন, এটা এমবাপের বিশ্বকাপ হতে পারে। কোচের কথাকেই যেন সত্যি প্রমাণ করার দায়িত্ব নিয়ে নিলেন ২৩ বছরের প্লেমেকার। নিজের দ্বিতীয় বিশ্বকাপেই মেসির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন তিনি। পাশাপাশি এ দিন জিনেদিন জিদানের রেকর্ডও স্পর্শ করে ফেললেন ফ্রান্সের তরুণ তারকা।
বিশ্বকাপের ম্যাচে এমবাপে মোট সাতটি করে ফেললেন। সেখানে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে গোল নিয়ে মেসির গোলসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮। মেক্সিকো ম্যাচের আগে এমবাপে ছুঁয়ে ফেলেছিলেন মেসিকে। এমবাপে নিজের দ্বিতীয় বিশ্বকাপেই ৭ গোল করে ফেললেন। সেখানে ৮ গোল করতে মেসির লেগেছে পাঁচটি বিশ্বকাপ।
আরও পড়ুন: মেসি-এনজো ম্যাজিক, জয়ে ফিরল আর্জেন্তিনা, চাপে মেক্সিকো
এ দিকে ফ্রান্সের হয়ে জিনেদিন জিদানের মোট গোলসংখ্যাও স্পর্শ করে ফেললেন এমবাপে। তাও মাত্র ২৩ বছর বয়সে। জিদান তাঁর পুরো ক্যারিয়ারে ফ্রান্সের জার্সিতে মোট ৩১টি গোল করেছেন। এমবাপে এই বয়সেই করে ফেললেন ৩১টি গোল। তিনি যে কোথায় থামবেন, কে জানে! শেষ ১২ ম্যাচে মোট ১৪টি গোল করেছেন এমবাপে।
এ দিন এমবাপের জোড়া গোলের হাত ধরে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে প্রি-কোয়ার্টারে চলে গেল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। দু’টি জয়েই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এমবাপে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে তিনি একটি গোল করেছেন। ডেনমার্কের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধে দু’টি গোলই তাঁর। চলতি বিশ্বকাপে তিন গোল হয়ে গেল এমবাপের। দু'টি সুযোগ পেলেন, দু'টিই কাজে লাগালেন। প্রথমার্ধে এরিকসেনদের জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারেনি জিহু, গ্রিজম্যানরা। বারবার আটকে গিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে পুরো অন্য ফ্রান্স।
আরও পড়ুন: জোড়া গোল এমবাপের, ডেনমার্ককে ২-১ হারিয়ে নকআউটে ফ্রান্স
ড্যানিশ ডিনামাইট এ দিন ধ্বংস করতে পারল না ফ্রান্সকে। প্রথমার্ধে চাপে রাখলেও, দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপের ম্যাজিক। তাতেই ছিন্নভিন্ন ডেনমার্ক। দ্বিতীয়ার্ধ একেবারে বদলে যায় ফ্রান্সের খেলা। বিরতির আগে ম্যাড়ম্যাড়ে ফ্রান্স যেন কোনও জাদুবলে জ্বলে ওঠে। এর ফলও তারা পায় হাতেনাতে। ৬০ মিনিটে ডেনমার্কের রক্ষণের চক্রব্যুহ ভেঙে গোল করেন এমবাপে।
তবে সেই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ফ্রান্স। তাদের রক্ষণের ভুলে ৬৭ মিনিটে ক্রিস্টেনসেনের গোলে সমতা ফেরায় ডেনমার্ক। বিশ্বকাপের শেষ ১৬ নিশ্চিত করতে ফ্রান্সের কাছে এই ম্যাচে জয় খুবই দরকার ছিল। এ বারও তাদের ত্রাতা সেই এমবাপেই। ম্যাচের শেষ লগ্নে ডান দিক থেকে বাঁ পায়ে বক্সের মধ্যে নিখুঁত ক্রস রেখেছিলেন গ্রিজম্যান। বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ঘাড়ের কাছে নিয়ে হেডে গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন এমবাপে।
চলতি বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ধারাবাহিক দিদিয়ের দেশঁর দল। আর্জেন্তিনা, জার্মানি শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে। প্রথম ম্যাচে ছয় গোল দিলেও দ্বিতীয় ম্যাচে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আটকে গিয়েছে ইংল্যান্ড। কিন্তু পরপর দু'টি ম্যাচ জিতে নকআউট পর্বে চলে গেল ফরাসিরা। আর তাদের সাফল্যের বড় অস্ত্র ২৩ বছরের এমবাপে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।