Manipur Violence: মণিপুরের হিংসায় বাড়ি পুড়ে ছাই, স্বপ্নও ভেঙে চুরমার তারকা ফুটবলারের

ভারতীয় ফুটবলার চিংলেনসানা সিং যখন কোঝিকোড়ে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে এএফসি কাপের প্লে-অফে ম্যাচ খেলছিলেন, সেই সময়ে তাঁর জীবনে নেমে এসেছিল অন্ধকার। ম্যাচ চলাকালীন কিছুই জানতে পারেননি। ম্যাচের পরেই ড্রেসিং রুমে জানতে পারেন, তাঁর জীবনের বাড়ি, স্বপ্ন সবটাই হারিয়ে বসে রয়েছেন।

পুড়ে ছাই চিংলেনসানা সিং-এর বাড়ি।

মণিপুরের হিংসার জেরে জীবনে একেবারে অন্ধকার ঘনিয়ে এল চিংলেনসানা সিং-এর। সব কিছু হারিয়ে বসে থাকলেন তিনি। তাঁর বাড়ি, গ্রাম, তরুণ ফুটবলারদের তৈরি করার স্বপ্ন- সব যেন এক নিমেষে শেষ হয়ে গিয়েছে। শুধু পরিবার কোনও মতে বেঁচে রয়েছে।

মণিপুরে প্রায় ৩ মাস ধরে জাতিগত হিংসার আগুন জ্বলছে। কুকি এবং মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসার জেরে তীব্র সংঘাতে জ্বলেপুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে মণিপুর। ৩মে থেকে শুরু হওয়া এই হিংসার জেরে মণিপুরের মানুষের জীবন সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে বহু মানুষ, আহত হয়েছে হাজার হাজার। ব্যাপক নাশকতা, অগ্নিসংযোগ এবং তাণ্ডবের কারণে কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ভারতীয় ফুটবলার চিংলেনসানা সিং যখন কোঝিকোড়ে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে এএফসি কাপের প্লে-অফে ম্যাচ খেলছিলেন, সেই সময়ে তাঁর জীবনে নেমে এসেছিল অন্ধকার। ম্যাচ চলাকালীন কিছুই জানতে পারেননি। ম্যাচের পরেই ড্রেসিং রুমে ফিরে তাঁর ফোনে চিংলেনসানা দেখতে পান, অসংখ্য মেসেজ এবং মিসড কল রয়েছে। কিন্তু তিনি তখন ফোন করে কাউকে পাচ্ছিলেন না। হায়দরাবাদ এফসি-র সেন্টার ব্যাককে যদিও খবর জানতে খুব বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই জানতে পারেন, তাঁর জীবনের বাড়ি, স্বপ্ন সবটাই হারিয়ে বসে রয়েছেন।

মণিপুরের চার্চন্দপুর জেলার খুমুজামা লেকেইয়ের বাসিন্দা চিংলেনসানা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমি সবটাই হারিয়ে বসে রয়েছি। মণিপুরের হিংসা আমাদের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। আমরা যা উপার্জন করেছি, আমাদের যা কিছু ছিল সবটা শেষ হয়ে গিয়েছে।’ তিনি যোগ করেছেন, ‘আমাদের বাড়িতে আগুন ধরামো হয়েছে। চার্চন্দপুর আমি একটা ফুটবল মাঠ বানিয়েছিলাম, সেটাও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ছোটদের ফুটবল খেলার জন্য জায়গাটা তৈরি করেছিলাম। সেটাও শেষ করে দিয়েছে ওরা। আমার পরিবার কোনও মতে সেখান থেকে পালিয়ে বেঁচেছে। কোনও এক ত্রাণ শিবিরে আছে ওরা।’

তাও পরিবারের সকলে বেঁচে থাকায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন চিংলেনসানা। এখন তিনি শান্তি চান। এই হিংসে বন্ধ হয়ে আবার ভোরের নতুন সকাল চান তিনি। মণিপুরের তারকা ফুটবলার বলেছেন, ‘আমি সব সময় চেয়েছি চার্চন্দপুরের উঠতি প্রতিভাদের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। যাতে ওরা নিজেদের মেলে ধরতে পারে। কোনও ফুটবল স্কুলে ভর্তি হওয়া সবার পক্ষে তো আর সম্ভব নয়। সে কারণেই আমি সেই ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম। সেই জায়গাটাই নষ্ট হয়ে গেল। এই ঘটনায় সব শেষ। তবে আমি হার মানব না, নতুন করে সবটা শুরু করতে চাই।’