ম্যাচে এগিয়ে থেকেও অবশেষে হেরে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল এফসি-র কাছে নতুন কোনও ঘটনা নয়। আইএসএলে এমন অনেকবার ঘটেছে। শুধু এই মরশুমে নয়, গত দুই মরশুমেও ইন্ডিয়ান সুপার লিগে দেখা গিয়েছে এই ঘটনা। অর্থাৎ, রোগটা পুরনো। পারফরম্যান্সে ক্রমশ উন্নতি হলেও, সেই পুরনো রোগটা যেন কিছুতেই যাচ্ছে না লাল-হলুদ শিবিরের। বৃহস্পতিবার রাতে সুপার কাপের ম্যাচে হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধেও যদি একই রোগে আক্রান্ত হয় তারা, তা হলে এই টুর্নামেন্টেরও গ্রুপ পর্ব থেকে তাদের বিদায়
আইএসএলে জেতার জায়গায় থেকেও ১৩ পয়েন্ট খুইয়েছে কলকাতার দল। দলের আক্রমণ বিভাগ যথেষ্ট তৎপর হলেও, মাঝমাঠ ও রক্ষণের দৈন্যদশায় বারবার হেরেছে তারা। চলতি সুপার কাপের প্রথম ম্যাচেও দেখা গিয়েছে একই রোগ। ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের ৩৮ মিনিটের মাথায় মোবাশির রহমান গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। দুই অর্ধেই আক্রমণাত্মক এবং দাপুটে ফুটবল খেলে ইস্টবেঙ্গল এফসি। কিন্তু ৭৩ মিনিটের মাথায় সমতা ফেরায় ওড়িশা। এবং ম্যাচটি ড্র হয়ে যায়। ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ স্ট্রাইকার জেক জার্ভিস যে সব গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন, সেগুলো না করলে অবধারিত ভাবে ম্যাচটি জিতত লাল-হলুদই।
আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপ খেলা অজি স্ট্রাইকারের সঙ্গে চুক্তি পাকা করার পথে মোহনবাগান
আইএসএলের সেমিফাইনালিস্টদের বিরুদ্ধে এই একই ভুল করলে বৃহস্পতিবার ম্যাচ জেতা যাবে না, তা দলের কোচ, খেলোয়াড়রা সবাই জানেন। কিন্তু মাঠে কার্যকর হচ্ছে না তাদের পরিকল্পনা। এটাই সমস্যা। আইএসএল ২০২১-২২-এর ট্রফিজয়ীরা এই মরশুমে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। সেমিফাইনালে যথেষ্ট পরিশ্রম করেই তাদের হারায় এটিকে মোহনবাগান। চলতি সুপার কাপে যে সেই ব্যর্থতার জ্বালা মেটাতেই নেমেছে স্প্যানিশ কোচ ম্যুানুয়েল মার্কেজের দল, তা টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই তারা বুঝিয়ে দিয়েছে আই লিগের টিম আইজল এফসি-কে ২-১-এ হারিয়ে।
এর আগে ইস্টবেঙ্গল এবং হায়দরাবাদ এফসি মোট ছ’বার মুখোমুখি হয়েছে, তার মধ্যে চার বারই জিতেছে নিজামের শহরের দল। বাকি দু’টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। দুই দলের মুখোমুখিতে মোট ১৭টি গোল হয়েছে। যার মধ্যে ১৩টি দিয়েছে হায়দরাবাদ ও চারটি ইস্টবেঙ্গল। এ বারের আইএসএলের দুই ম্যাচেই ২-০ গোলে জেতে হায়দরাবাদ। অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কখনও জিততে পারেনি লাল-হলুদ বাহিনী। বৃহস্পতিবার মাঞ্জেরিতে সেই জয় আসে কি না, সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫ ধাপ লাফ মারলেন সুনীলরা, ব্রাজিলকে পিছনে ঠেলে শীর্ষে মেসিরা
কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন আশাবাদী। তবে প্রতিপক্ষের প্রশংসা করে কোচ বলেন, ‘একজন কোচকে যথেষ্ট সময় দিলে যে, একটা দল কোথা থেকে কোথায় উঠে আসতে পারে, তার উদাহরণ হায়দরাবাদ এফসি। শুরুর দিকে ওরা টেবলের নীচের দিকে ছিল। গত দু’বছর ধরে ওরা প্লে অফে খেলছে। গতবার চ্যাম্পিয়নও হয়। যথেষ্ট ভালো দল ওরা।’ এই কথা বলে যেন ইস্টবেঙ্গলকেই খোঁচা দিয়েছে। কারণ লাল-হলুদ কনস্ট্যান্টাইনকে আর রাখছে না। তারা নতুন কোচ ইতিমধ্যে বেছে নিয়েছে। সের্জিয়ো লোবেরা বেঙ্গলের নতুন কোচ।
এ দিকে নিজের দলের প্রশংসা করে স্টিফেন বলেছেন, ‘গত ম্যাচে (হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে) প্রথমার্ধে বিপক্ষকে আমরা কার্যত ধ্বংস করে দিই। মানোলো স্বীকার করেছিল ওর দল কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিল সেই ম্যাচে। আমাদের সমস্যা ধারাবাহিকতার অভাব। ভালো ভালো দলকে হারিয়েছি আমরা। তবু এগোতে পারিনি এই সমস্যার জন্য। এ ছাড়াও কিছু সমস্যা আছে। তবু ওড়িশার বিরুদ্ধে যথেষ্ট ভাল খেলেছে ছেলেরা। উজ্জীবিত ফুটবল খেলছে ওরা। এই ম্যাচটা আগেরগুলোর চেয়ে আলাদা। আমরা জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’
দলের সর্বোচ্চ গোলাদাতা ব্রাজিলীয় ক্লেটন সিলভা আবার বলেছেন, ‘গত ম্যাচের শুরুটা প্রত্যাশা অনুযায়ী করতে পারিনি আমরা। দ্বিতীয়ার্ধে ভালোই খেলেছিলাম। তবে ওড়িশার চেয়ে ভাল দল হায়দরাবাদ। আইএসএলে দু'টো ম্যাচেই ওদের কাছে হেরেছিলাম। এটাই আমাদের ভালো খেলতে উদ্বুদ্ধ করবে। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই, আমাদের জন্য কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে। হায়দরাবাদ ভালো দল। বিশেষ করে ওদের কোচ দুর্দান্ত। তবে ওদের হারিয়ে আমরা চমক দিতে চাই।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।