ডার্বির আগে যেন একটু বেশিই চাপে মোহনবাগান। আর হবে নাই বা কেন! যে দলের প্রথম সারির সাত জন প্লেয়ার জাতীয় দলে রয়েছেন। দু'জনের আবার চোট, তাদের চাপে থাকাটাই স্বাভাবিক। চোটের কারণে নেই আশিক কুরুনিয়ান এবং সাহাল আব্দুল সামাদ। যদিও সুস্থ থাকলেও সামাদকে পেত না সবুজ-মেরুন। কারণ ভারতীয় দলে নাম ছিল তাঁর। সেই সঙ্গে দেশের হয়ে খেলতে যাওয়া মনবীর সিংহ, দীপক টাংরি, অনিরুদ্ধ থাপা, লিস্টন কোলাসো, শুভাশিস বসু, বিশাল কাইতদেরও পাবে না মোহনবাগান। প্রথম দলের মোট ৯ জনকে ছাড়াই ডার্বি খেলতে নামতে হবে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডকে। এমন খারাপ পরিস্থিতি শেষ কোন ডার্বিতে হয়েছিল বাগানের, মনে করাটাও কঠিন।
ডার্বি ম্যাচের আগের দিন মোহনবাগানের সহকারী কোচ ক্লিফোর্ড মিরান্ডা সাংবাদিক সম্মেলনে এসে নিজেদের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েও দাবি করেছেন, চাপ থাকবে ইস্টবেঙ্গলের উপরই। তাঁর মতে, ‘আপনারা জানেন আমাদের ন'জন প্লেয়ার নেই। অর্ধেক জাতীয় দলে, তার উপর চোট-আঘাত রয়েছে। আমরা একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। তবে যারা আছে, তাদের ওপর পূর্ণ আস্থা আছে। ফুটবলের মানের পার্থক্য হওয়াটা খেলারই অঙ্গ। তবে ফুটবলাররা চারিত্রিক দৃঢ়তা দেখিয়েছে। ওরা লড়াই করছে। আগের ম্যাচে আমরা ৯৩ মিনিটে গোল করেছি। এটাই প্রমাণ যে, আমরা লড়াই করছি। ইস্টবেঙ্গল সবাইকে পাচ্ছে। ড্র দরকার। তাই ওরা ফেভারিট হিসেবে শুরু করবে। চাপ ওদের ওপর থাকবে, আমাদের উপর নয়। চ্যালেঞ্জটা ওদেরই।’
ডিফেন্স সে ভাবে জমাট নয়। বিপক্ষের আক্রমণের সামনে ভেঙে পড়ছে। সুপার কাপের প্রথম দুই ম্যাচে শ্রীনিধি ডেকান এবং হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে গোল হজম করতে হয়েছে বাগানকে। তাও আবার শুরুর দিকে। ডার্বিতে যেটা সমস্যায় ফেলে দিতে পারে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডকে। কিন্তু ক্লিফোর্ডের দাবি, রক্ষণ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। বরং রক্ষণ প্রসঙ্গ উঠতে একটু বিরক্তই হলেন। ক্লিফোর্ড বলেন, ‘রক্ষণ নিয়ে কোনও চাপ নেই। কেন এই প্রশ্ন করা হচ্ছে? গোল করার পাশাপাশি গোল হজমও ফুটবলের অঙ্গ। আইএসএলে আমার কঠিন পরিস্থিতিতে গোল খেয়েছি। অনেক প্লেয়ারকেই সেই সব ম্যাচে পাওয়া যায়নি। টেকনিক্যাল কারণে আমরা খুব বেশি গোল হজম করিনি। তাই রক্ষণ নিয়ে ভাবছি না।’
মঙ্গলবার থেকে দলকে কোচিং করাচ্ছেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। কিন্তু কোচ হিসেবে নাম রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায়, ডার্বিতে বেঞ্চে বসতে পারবেন না তিনি। কোচের হটসিটে থাকবেন ক্লিফোর্ডই। গত বছর ওড়িশা এফসিকে সুপার কাপ জিতিয়েছিলেন ক্লিফোর্ডই। এবার তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা হয়তো একটু বেশিই। কিন্তু অভিজ্ঞতার নিরিখে হাবাস অনেক এগিয়ে। আইএসএলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল কোচ। দু'বার ট্রফি জিতেছেন। তাঁর অন্তর্ভুক্তি দলকে কতটা সাহায্য করবে? ক্লিফোর্ড বলেন, ‘হাবাস নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন। এটিকে এবং এটিকে মোহনবাগান হিসেবে আইএসএল জিতিছিলেন। প্রচুর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। এছাড়াও কিছু তথ্য আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। যা আমাদের কাজে লাগবে।’
গত কয়েক বছরের ডার্বিতে পরিসংখ্যানের নিরিখে অনেক এগিয়ে মোহনবাগান। ধারেকাছে নেই ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু এবার সুপার কাপের পরিস্থিতি একটু আলাদা। পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে যে বাগানের চেয়ে কিছুটা এগিয়েই শুরু করবে লাল-হলুদ, সেটা বলছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরাও। ক্লিফোর্ডও আকারে ইঙ্গিতে বলে দিলেন, ‘মরশুমের শুরুটা আমরা ভালো করেছিলাম। টানা অপরাজিত ছিলাম। কিন্তু একাধিক চোট-আঘাত, কার্ড সমস্যা আমাদের কিছুটা ধাক্কা দিয়েছে। তবে আমরা নতুন কিছু করার চেষ্টা করব না। নিজেদের সংগঠিত করে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। আপাতত ইস্টবেঙ্গল ভালো খেলছে। স্বচ্ছ ফুটবল খেলছে। দলে চোট নেই। এটা কোচকে নিজের মতো করে পরিকল্পনা সাজাতে সাহায্য করবে। ওরা একটা মোমেন্টাম পেয়ে গিয়েছে।’ এদিকে চোটের জন্য দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন আনোয়ার আলি। সদ্য প্র্যাকটিসে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু ডার্বি খেলার কোনও সম্ভাবনা নেই তাঁর।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।