অর্থ উপার্জনের জন্য নৈতিকতাকে জলাঞ্জলি নয়, বাবার দেওয়া শিক্ষা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছেন সচিন তেন্ডুলকর। পরবর্তী প্রজন্মের রোল মডেল হওয়ার দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা থেকে পিছু হটেননি ক্রিকেটের অবিসংবাদিত ঈশ্বর। তাই তামাকজাত দ্রব্য অথবা কোনও মাদক দ্রব্যের বিজ্ঞাপনের জন্য কোটি কোটি টাকার প্রস্তাব ফিরিয়েছেন তেন্ডুলকর।
তামাক বিরধী দিবসে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে সচিন নিজেই জানান, কেন তিনি জীবনে কখনও মদ-সিগারেট বা নেশার জিনিসের বিজ্ঞাপন করেননি। আসলে সচিন নিজের পিতা রমেশ তেন্ডুলকরকে কথা দিয়েছিলেন, কখনও কোনও মাদক দ্রব্যের প্রচার করবেন না।
সচিন বলেন, ‘যখন ভারতের হয়ে খেলতে শুরু করি, সবে মাত্র স্কুল থেকে বেরিয়েছি। বহু বিজ্ঞপনের প্রস্তাব আসতে শুরু করে আমার কাছে। তবে আমার বাবা আমাকে বলেন যে, কখনও মাদকদ্রব্যের বিজ্ঞাপন করবে না। আমি অনেক এমন প্রস্তাব পেয়েছি, তবে কখনও রাজি হইনি।’
তেন্ডৃুলকর আরও বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে কথা দিয়েছিলাম। উনি বলেন যে, আমি একজন রোল মডেল। বহু মানুষ আমার কাজ অনুসরণ করবেন। সেকারণেই আমার তামাকজাত দ্রব্য বা অ্যালকোহলকে সমর্থন করা উচিত নয়। ১৯৯০-এর সময়ে আমার ব্যাটে কোনও স্টিকার ছিল না। কোনও সংস্থার সঙ্গে আমার চুক্তি ছিল না। তবে দলের বাকিরা প্রায় সকলেই উইলস ও ফোর স্কোয়ার, বিশেষ ২টি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিল। আমি প্রতিশ্রুতি ভাঙিনি। তাই এমন ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করিনি।’
সচিন আরও যোগ করেন, ‘অনেকেই আমাকে প্রস্তাব দেন তাঁদের তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন করার, আমার ব্যাটে স্টিকার লাগানোর। তবে আমি সেই সব ব্র্যান্ডের প্রচার করিনি। আমি তামাকজাত দ্রব্য ও অ্যালকোহল, এই দুটি জিনিস থেকে দূরে সরে থেকেছি এবং বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছি।’
উল্লেখ্য, সচিন তেন্ডুলকর প্রায় আড়াই দশকের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে ২০০টি টেস্ট, ৪৬৩টি ওয়ান ডে ও ১টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন। টেস্টে সব থেকে বেশি ১৫৯২১ রান করার বিশ্বরেকর্ড রয়েছে সচিনের দখলে। সব থেকে বেশি ৫১টি শতরান করেছেন তিনি। টেস্টে ৪৬টি উইকেটও নিয়েছেন সচিন।
ওয়ান ডে ক্রিকেটেও সব থেকে বেশি ১৮৪২৬ রান সংগ্রহ করেছেন তেন্ডুলকর। শতরান করেছেন সব থেকে বেশি ৪৯টি। সচিন ওয়ান ডে ক্রিকেটে ১৫৪টি উইকেট নিয়েছেন। সব ফর্ম্যাট মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব থেকে বেশি রান করার বিশ্বরেকর্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতেই।