শুভব্রত মুখার্জি: অলিম্পিক্সে সোনার পদক জীবনটাই বদলে দিয়েছে নীরজ চোপড়ার।২০১৭ সাল থেকে জুনিয়র লেভেল থেকে ধারাবাহিক সাফল্য পেয়ে এসেছেন এই ভারতীয় জ্যাভলিন থ্রোয়ার। তবে ২০১৯ সালে তার কনুইয়ের এক চোট প্রায় তার ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছিল। অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল কনুইয়ের। তিনি আদৌ আর জ্যাভলিন থ্রো করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল। জ্যাভলিন থ্রোর ক্ষেত্রে বডিকে ধনুক এবং জ্যাভলিনকে তির হিসেবে ধরা হয়। সেই অবস্থায় একটি বিশেষ আকার তৈরি করে জ্যাভলিনকে ছুড়তে হয় দূরত্ব লাভের আশায়। নীরজের কনুইয়ের চোটের সময় থেকে জার্মান বায়োমেকানিক বিশেষজ্ঞ ক্লস বারটোনিৎজ তাকে নিয়ে যেভাবে খেটেছেন তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
ক্লস বারটোনিৎজ প্রথম নীরজকে বুঝিয়েছিলেন কিভাবে নিজের দেহকে ধনুক হিসেবে ব্যবহার করে এবং জ্যাভলিনকে তিরের মতন ব্যবহার করে জ্যাভলিন থ্রোয়ে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। থ্রোয়ার তার দেহের ইলাস্টিক অংশ অর্থাৎ মাসেল,লিগামেন্ট ও ফ্যাসিয়া থেকে সমস্ত শক্তিটা তৈরি করবে। এই অংশগুলোতে টেনশন তৈরি এবং থ্রোয়ের সময় সেই টেনশন রিলিজের মধ্যে দিয়ে দূরত্ব পাওয়ার চেষ্টা করতে হয়। ২০১৮ সাল থেকে নীরজের সাথে কাজ শুরু করেন ক্লস বারটোনিৎজ। তবে ২০২০ সাল থেকে শুধুমাত্র নীরজের থ্রোয়ের উপর নজরদারি শুরু করেন তিনি।
আর দীর্ঘ বছর তিনেকের ক্লস বারটোনিৎজের পরিশ্রম সাফল্যের মুখ দেখে টোকিও অলিম্পিক্স শেষ হওয়ার ঠিক আগের দিনে। বারটোনিৎজ জানান ' শনিবার সবথেকে দ্রুততম ছিল নীরজ। ও ওর দৌড়ের মধ্যে দিয়েই শক্তি তৈরি করছিল। তারপর সেই শক্তি ব্লক ব্লক করে সঞ্চয় করে শক্তিশালী ব্লক তৈরি করছিল। জার্মানির ভেটার একমাত্র প্রতিযোগি ফাইনালে ছিলেন যিনি ৯০ মিটারের উপরে তার ক্যারিয়ারে থ্রো করেছিলেন। ও অত্যন্ত ফিট এবং ভাল ব্লকার। তোমার বডির ইলাস্টিসিটি তোমার জ্যাভলিন থ্রোতে যেতে হবে। শুধু শক্তি গেলে হবে না। ঠিক যেমন ধনুকের ক্ষেত্রে হয়।'