একঝলক দেখে মনে হতে পারে থার্ড স্লিপ অঞ্চলে নিতান্ত সহজ ক্যাচ। আসলে সেটা যে ফাঁদ পেতে শিকার ধরা, ক্রিকেটপ্রেমীদের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না। রিয়ান পরাগের চালাকিতেই যে এমার্জিং এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে রাকিবুল হাসানকে আউট হতে হয়, সেটা অস্বীকার করতে পারবেন না বাংলাদেশের তারকা নিজেও। সেই কারণেই হতভম্ব হয়ে ক্রিজে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ব্যাটারকে। গ্যাপ দেখে ভালো শট খেলা সত্ত্বেও কীভাবে আউট হলেন, ভেবে কুলকিনারা পাননি রাকিবুল।
কলম্বোয় বাংলাদেশ-এ দলের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালের শুরু থেকে মোটেও স্বস্তিতে ছিল না ভারতীয়-এ দল। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে একের পর এক উইকেট হারায় ভারত। ক্যাপ্টেন যশ ধুল একপ্রান্ত আঁকড়ে লড়াই চালান। তাঁর অধিনায়কোচিত হাফ-সেঞ্চুরির সুবাদেই ভারত লড়াই করার রসদ সংগ্রহ করে নেয়। যদিও কোনও রকমে দু'শো রানের গণ্ডি টপকেই অল-আউট হয় ভারতীয়-এ দল।
পালটা ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ওপেনিং জুটিতেই শক্ত ভিত গড়ে ফেলে। তবে ওপেনিং জুটি ভাঙার পরেই ভারতীয় বোলাররা ধস নামান বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে। ধারাবাহিকভাবে উইকেট খুইয়ে বাংলাদেশ দেড়শো টপকেই হাল ছাড়ে।
ম্য়াচে যশ ধুলের দুর্দান্ত ব্যাটিং ছাড়াও নিশান্ত সিন্ধু-মানব সুতারদের অনবদ্য বোলিংয়েরও প্রশংসা করতে হয়। তবে ফিল্ডাররা যেভাবে সহযোগিতা করেন বোলারদের, তাতে ভারতের জয়ের পথ চওড়া হয়। বিশেষ করে ভারতের ক্লোজ-ইন ফিল্ডিং ছিল অনবদ্য। স্লিপ থেকে দৌড়ে গিয়ে সৌম্য সরকারের যে ক্যাচটি ধরেন নিকিন জোস, তা টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা সন্দেহ নেই। তবে স্লিপ অঞ্চলেই রাকিবুল হাসানের ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে যে মুন্সিয়ানা দেখান রিয়ান পরাগ, তাকে কুর্নিশ না জানিয়ে উপায় নেই।
দ্বিতীয় ইনিংসের ৩১.৬ ওভারে নিশান্ত সিন্ধুর বলে রিভার্স সুইপ মারার চেষ্টা করেন বাঁ-হাতি রাকিবুল। তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে শট নেন। তবে বল বাউন্ডারিতে যাওয়ার বদলে সোজা জমা পড়ে রিয়ানের হাতে। রিয়ান পরাগ ফার্স্ট স্লিপে ফিল্ডিং করছিলেন। রাকিবুল রিভার্স শট খেলার উদ্যোগ নেওয়া মাত্রই রিয়ান ফিল্ড পজিশন বদলাতে শুরু করেন। তিনি ফার্স্ট স্লিপ অঞ্চল থেকে নিজের বাঁ-দিকে সরে যেতে থাকেন ক্রমশ। শেষমেশ তাঁর অনুমানই সঠিক প্রমাণিত হয়।
রাকিবুলের শটে বল থার্ড স্লিপ অঞ্চলে উড়ে যায়। রিয়ান ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছেন সেখানে। তাই চলন্ত অবস্থাতেই ক্যাচ ধরতে বিশেষ অসুবিধা হয়নি পরাগের। এই উইকেটের পিছনে বোলার নিশান্ত সিন্ধুর থেকেও রিয়ানের বুদ্ধিমত্তার কৃতিত্ব প্রাপ্য বেশি।
উল্লেখ্য, শুরুতে ব্যাট করে ৪৯.১ ওভারে ২১১ রানে অল-আউট হয়ে যায় ভারত। যশ ধুল দলের হয়ে সব থেকে বেশি ৬৬ রান করে আউট হন। ৮৫ বলের লড়াকু ইনিংসে তিনি ৬টি চার মারেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ-এ দল ৩৪.২ ওভারে মাত্র ১৬০ রানে অল-আউট হয়ে যায়। ৫১ রানের বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেন যশ ধুলরা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।