একসময় সরফরাজ খান মানেই বলা হত নেক্সট বিগ থিং ইন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট। আইপিএলে আরসিবি-র হয়ে নজর কেড়েছিলেন এই তরুণ। চেহারাটা ঠিক আধুনিক খেলোয়াড়দের মতো না হলেও, ব্যাটিং দক্ষতায় কোনও নবীন ক্রিকেটারের থেকে খাটো ছিলেন নি তিনি। প্রশংসা আদায় করেছিলেন স্বয়ং কিং কোহলির। কিন্তু এরপরে মুম্বই ছেড়ে উত্তর প্রদেশে পাড়ি দেন সরফরাজ। নতুন জায়গায় খাপ খাওয়াতে পারেননি তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে তাই বড় রানের খরা, আইপিএলের হাজার ওয়াটের মঞ্চেও ক্রমশ নিষ্প্রভ হতে থাকেন সরফরাজ। সাফল্যের হাইওয়েতে সরফরাজকে পিছনে ফেলে রেখে এগিয়ে গিয়েছেন পৃথ্বী, শুভমন সহ অন্যান্যরা।
যখন সবাই সরফরাজের বিষয়ে কার্যত ভুলেই গিয়েছেন, তখন নিঃশব্দে মুম্বইয়ে ফেরেন এই তরুণ। বাধ্যতামূলক এক বছরের কুলিং অফ পিরিয়ডের জন্য গত বছর খেলতে পারেননি তিনি। ময়দানে দিনের পর দিন কিটব্যাগ নিয়ে একটি সুযোগের জন্য দাঁতে দাঁত চিপে লড়াই। ডাক এল মুম্বই দলে। কিন্তু প্রথম থেকেই একের একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ দল।
এবার উত্তরপ্রদেশে বিরুদ্ধে কার্যত মরণবাঁচনের ম্যাচ । প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড় গড়ে উত্তরপ্রদেশে। আট উইকেটে ৬২৫ রান করে উত্তরপ্রদেশ। ওয়াংখেডেতে তখন রঞ্জি থেকে ছিটকে যাওয়ার মুখে মুম্বই। ১৬ রানে দুটি উইকেটও পড়ে গিয়েছে। যখন মনে হচ্ছিল, এবারের জন্য মুম্বইয়ের যাত্রার যবনিকা অবশ্যসম্ভাবী, তখনই ঝলসে উঠলেন সরফরাজ।
আগের অস্থিরতা ছেঁটে সেই মুম্বইশুলভ খাদুস ব্যাটিং করলেন। ক্রমে বশ মানল উত্তরপ্রদেশের বোলাররা। ট্রিপল সেঞ্চুরি শুধু করলেন না, মুম্বইকে প্রথম ইনিংসের লিডটিও নিশ্চিত করলেন তিনি।সরফরাজের ৩০১ রানের সৌজন্যে মুম্বই সাত উইকেটে ৬৮৮। খেলা ড্র হলেও লিড পেয়ে গিয়েছে মুম্বই।
তিনশোর পর তাঁর যে মুষ্টিবদ্ধ ভাবে আকাশের দিকে লাফ, তা যেন অন্ধকার থেকে আলোয় উত্তরণের রূপক। সরফরাজের বাবা জানান যে উত্তর প্রদেশে পাঠানোর তাঁর সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। বুধবার যেন তাঁরও শাপমুক্তি ঘটল। খুশি মুম্বইয়ের প্রধান নির্বাচক মিলিন্দ রেগেও। মুম্বই ক্রিকেটে আগামী দিনে সরফরাজ তারকা হয়ে উঠবেন, তাঁর বিশ্বাস। সরফরাজ খুশি, ফের ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফিরতে পেরে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।