শুভব্রত মুখার্জি: জিম্বাবোয়েতে চলতি ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ারের আসর একেবারে জমে গিয়েছে। আইসিসির আ্যাসোসিয়েট দেশগুলোর তরফে একের পর এক ভালো পারফরম্যান্স প্রায় নিয়মিতভাবেই দেখা যাচ্ছে। গত ম্যাচেই রীতিমতো সকলকে চমকে দিয়েছিল স্কটল্যান্ড। প্রায় খাদের কিনারা থেকে টেস্ট খেলিয়ে দেশ আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছিল তারা। তবে এদিন আমেরিকা বনাম নেদারল্যান্ডস ম্যাচে এমন কোন উত্তেজক ঘটনার সাক্ষী থাকতে হল না দর্শকদের। গত ম্যাচে আয়োজক জিম্বাবোয়ের কাছে হেরেছিল নেদারল্যান্ডস। আর এদিন তারা পাঁচ উইকেটে হারিয়ে দিল আমেরিকাকে। এদিন অধিনায়কোচিত ইনিংস খেললেন স্কট এডওয়ার্ডস এবং তাঁর সেই ইনিংসে ভর করেই আমেরিকার বিরুদ্ধে সহজ জয় পেল নেদারল্যান্ডস। ম্যাচ জিতে দলের বোলারদের ভূয়সি প্রশংসা করলেন অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস।
ডাচ ক্যাপ্টেনের মতে গত ম্যাচে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে বেদম ঠ্যাঙানি খাওয়ার পরে এই ম্যাচে যেভাবে ফিরে এসেছে তাঁর দলের বোলাররা তা এককথায় অনবদ্য। টসে জিতে প্রথমে বোলিং করা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন উইকেটে প্রথম ১০-১৫ ওভারে বোলারদের জন্য সাহায্য থাকে। এরপর একেবারেই পাটা হয়ে যায় উইকেট। ম্যাচ শেষে এদিন স্কট এডওয়ার্ডস জানিয়েছেন, ‘আমি মনে করি গত ম্যাচের পরে যেভাবে আমাদের বোলাররা ফিরে এসেছে এই ম্যাচে তা অনবদ্য। টস জয়টা বেশ ভালোই ছিল। কারণ এই উইকেটে প্রথম ১০-১৫ ওভার বোলাররা উইকেট থেকে সাহায্য পায়। আর এরপরেই উইকেট একেবারে পাটা হয়ে যায়। ওই সময়টা কাটিয়ে দিতে পারলে তার পরে বড় রান করাই যায়। আমি মনে করি আমাদের অনেকেই এখানে সকালের দিকে ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত। প্রথম কয়েক ওভারে যে সতর্কভাবে খেলতে হবে সেটা সবাই জানে। এরপর আশা করা যায় যে আমরা সবাই নিশ্চয় একটা পথ খুঁজে পাবে যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা বড় রান করতে পারব। এরপর ২২ গজে খেলতে নেমে সেই মতো পরিকল্পনা করেই আমরা ব্যাটিংটা করব। আমাদের উদ্দেশ্য হল সবসময়ে সজাগ থাকা। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজটা করে যাওয়া। আজকের জয়ে আমি খুশি। প্রথম জয়টা স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। যখন জয়ের লক্ষ্যমাত্র কম থাকে তখন যে সেটা হয়ে যায় তাঁকেই সাধারণত উইকেটে থেকে ম্যাচটা জিতিয়ে আসতে হয়। আমি সেই কাজটাই আজকে করেছি। আমি যখন সেট হয়ে যাই, তখন আমি ইনিংসকে ধরে রাখার চেষ্টা করি।’ অধিনায়কত্ব, কিপিং এবং ব্যাটিংকে কীভাবে আলাদা রাখেন সেই প্রসঙ্গে স্কট এডওয়ার্ডস জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি একটু কঠিন হলেও সম্ভব। এমন কিছু কঠিন নয়। আমি চেষ্টা করি যখন ব্যাটিং করছি তখন সেই দিকে মন দিতে। আর যখন কিপিং করছি তখন সেই দিকে মন দিতে।’
এদিনের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নামে আমেরিকা। প্রথমেই সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। শূন্য রানেই আউট হয়ে যান সুশান্ত মোদানি। ব্যক্তিগত ১০ রানের মাথায় এবং দলীয় ১৮ রানের মাথায় স্টিভেন টেলরের উইকেট হারায় তারা। একটা সময়ে ৪৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে সমস্যায় পড়ে যায় আমেরিকা। সেখান থেকে তাদেরকে লড়াইতে ফেরান গজানন্দ সিং এবং সায়ন জাহাঙ্গীর। গত ম্যাচে শতরানকারী গজানন্দ সিং এদিন ৩৩ রান করেন। দলের হয়ে এদিন সর্বোচ্চ ৭১ রান করেন জাহাঙ্গীর। শেষ দিকে ৫৩ বলে ৩৮ রান করে আমেরিকাকে ২০০'র গন্ডি পার করান জেসি সিং। নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ২১১ রান করে আমেরিকা।ডাচদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন ক্লেইটন ফ্লয়েড এবং রায়ান ক্লেইন।
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে নেদারল্যান্ডসের শুরুটাও ভালো হয়নি । ১৭ রানের মাথাতে তাদের হারাতে হয় ওপেনার বিক্রমজিত সিংয়ের উইকেট। এরপরেই ইনিংসে হাল ধরেন ম্যাক্স ওডাইড এবং ওয়েসলি ব্যারেসি। ওডাইড ২৬ এই ব্যারেসি ২৯ রান করে আউট হন। ৬৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ডাচরা। এর কিছুক্ষণ পরেই দলীয় ৮৩ রানের মাথায় তাদের হারাতে হয় বাস ডি লিডের উইকেট।এরপরেই ডাচ ইনিংসের হাল ধরেন তেজস নিদামানুরু এবং স্কট এডওয়ার্ডস। প্রথমে তেজসের সঙ্গে ৭২ রানের জুটি গড়েন এডওয়ার্ডস। এরপর লোগান ভ্যান বিকের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য ৫৯ রানের জুটি গড়ে দলকে সহজ জয় এনে দেন স্কট এডওয়ার্ডস। ৬.৪ ওভার অর্থাৎ ৪০ বল বাকি থাকতে পাঁচ উইকেটে জয় পায় ডাচরা। তেজস করেন ৫৮ রান। ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন স্কট এডওয়ার্ডস।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।