সবাইকে হতবাক করে স্যাম অল্টম্যানকে ওপেনএআই-এর সিইও পদ থেকে অপসারণ করেছে সংস্থার বোর্ড। এরপরই অন্তরবর্তী সিইও হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংস্থার চিফ টেকনোলজিকাল অফিসার মীরা মূরতিকে। কে এই মীরা? রিপোর্ট অনুযায়ী, অ্যালবেনিয়ায় জন্ম মীরার। তাঁর মা-বাবাও সেই দেশেরই। পরে কানাডায় পড়াশোনা করেন তিনি। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পাশ করেন। ডার্টমুথ কলেজে স্নাতকের পড়াশোনা করার সময় একটি হাইব্রিড রিঅ্যাক্টর তৈরি করে অনেককে অবাক করে দিয়েছিলেন তিনি। পড়াশোনা করার সময়ই গোল্মম্যান শ্যাকস-এর মতো সংস্থায় ইন্টার্নশিপ করেছিলেন চিনি।
২০১৮ সালে ওপেনএআই-তে যোগ দিয়েছিলেন মীরা। তার আগে তিনি টেসলায় কাজ করতেন। সেখানে মডেল এক্স গাড়িটি তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। টেসলার সিনিয়র প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে তিনবছর কাজ করেছিলেন মীরা। পরে ২০১৮ সালে তিনি সংস্থা বদল করেন। সেই থেকে তিনি ওপেনএআই-তে আছেন। গতবছরই তাঁকে ওপেনএআই-এর সিটিও করা হয়েছিল। এই আবহে সংস্থায় দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতার কারণেই অন্তরবর্তীকালীন ভাবে তাঁকে সংস্থার প্রধান পদে বসানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংস্থার কর্মীদের হতবুদ্ধি না হয়ে কাজ চালিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মীরা।
সংস্থার সিইও-র দায়িত্ব গ্রহণ করে কর্মীদের উদ্দেশে একটি মেমো লেখেন মীরা। তাতে তাঁর বক্তব্য, 'আমরা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছি। আমাদের এই টুল ব্যাপকভাবে গৃহীত হচ্ছে। ডেভেলপাররা সক্রিয়ভাবে আমাদের প্ল্যাটফর্মে কাজ করছে এবং নানান জিনিস তৈরি করছেন এবং নীতিনির্ধারকরা এই সিস্টেমগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার সর্বোত্তম উপায়গুলি নিয়ে আলোচনা করছেন। আমাদের তাই এগিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য একটি সুযোগ আমাদের সামনে রয়েছে। সেখানে যাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এমন ভাবে তৈরি করা হয় যা ভালোর জন্যই ব্যবহার করা হয়।' এদিকে মীরা জানান, ওপেনএআই-এর সবথেকে বড় বিনিয়োগকারী সংস্থা মাইক্রোসফটের সঙ্গে তাদের জুটি অক্ষত থাকবে।
উল্লেখ্য, প্রায় একবছর আগে বিশ্বে ঝড় তুলে আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছিল চ্যাটজিপিটি। এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স চ্যাটবক্সটি তৈরি করেছিল ওপেনএআই নামক এই সংস্থা। সেই ওপেনএআই-এর বোর্ডই সংস্থার সিইও স্যাম অল্টম্যানকে সরিয়ে দিল পদ থেকে। মাইক্রোসফটের বিনিয়োগ প্রাপ্ত সংস্থার বোর্ডটি স্যাম অল্টম্যানকে সরিয়ে দেওয়ার পর বিবৃতিতে বলে, ওপেনএআই-কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে স্য়াম অল্টম্যানের ওপর আর ভরসা করা যাচ্ছে না। এদিকে এই ঘটনার পরই চ্যাটজিপিটির সহপ্রতিষ্ঠাতা তথা সংস্থার প্রেসিডেন্ট গ্রেগ ব্রকম্যান নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন। মীরার মেমোতে অবশ্য স্যাম বা গ্রেগের উল্লেখ ছিল না।