হিন্দু সমাজে তুলসি গাছকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। প্রতিটি বাড়িতে তুলসী গাছের পুজো হয়। অনেক বাড়িতেই তুলসী গাছের পুজো দিয়ে সকাল শুরু হয়। হিন্দু সমাজে বছরে একবার তুলসী বিবাহের আয়োজন করা হয়।
তুলসী বিবাহ এই বছর ৫ নভেম্বর ২০২২ শনিবার পালিত হবে৷ হিন্দু ধর্মে তুলসী গাছকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। প্রতি বছর কার্তিক শুক্লা একাদশীতে হিন্দু সম্প্রদায় তুলসী বিবাহের আয়োজন করে। এই তুলসী বিবাহ নিয়ে হিন্দু শাস্ত্রে বহু কাহিনী প্রচলিত আছে। এই গল্পগুলো মনে রেখেই এই উৎসব পালিত হয়।
দেবোত্থানী একাদশীতে তুলসী বিবাহের পিছনে একটি কিংবদন্তি রয়েছে। কিংবদন্তি অনুসারে, প্রাচীনকালে তুলসী, যার নাম বৃন্দা, তিনি ছিলেন শঙ্খচুড় নামক এক অসুরের স্ত্রী। শঙ্খচূড় ছিল দুষ্ট ও অধার্মিক, দেবতা ও মানুষ, সবাই এই অসুর দ্বারা জর্জরিত ছিল। তুলসীর পবিত্রতার কারণে সকল দেবতা মিলেও শঙ্খচূড়কে বধ করতে পারেননি। সমস্ত দেবতা একত্রিত হয়ে ভগবান বিষ্ণু ও শিবের কাছে এসে অসুরকে বধ করার উপায় জিজ্ঞাসা করলেন। সেই সময় ভগবান বিষ্ণু শঙ্খচূদের রূপ ধারণ করেন এবং তুলসীর সতীত্ব বিলীন করেন। যার ফলে শঙ্খচূদের ক্ষমতা শেষ হয়ে যায় এবং শিব তাকে হত্যা করেন। পরে তুলসী যখন এই কথা জানতে পারেন, তখন তিনি ভগবান বিষ্ণুকে পাথর হয়ে যাওয়ার অভিশাপ দেন। বিষ্ণু তুলসীর অভিশাপ মেনে নিয়ে বললেন তুমি পৃথিবীতে আমার পত্নী রূপে পূজিত হবে এবং তোমার পূজাও হবে। নেপালের গণ্ডকী এখনও পৃথিবীতে রয়েছে। শালিগ্রাম শুধু গণ্ডকী নদীতেই পাওয়া যায়।
এই উৎসব নিয়ে একটি লোককথাও আছে। একটি পরিবারে দুই বোন ছিল। এক বোন প্রতিদিন তুলসী গাছের সেবা করতেন। কিন্তু তার দিদির এই জিনিসটা ভালো লাগেনি। সে অনেক সময় রেগে গিয়ে বলত বিয়ে করলে তোর খাবারে শুধু তুলসী দেব। যৌতুক হিসেবেও তুলসী দেব। বহু বছর পর বিয়ে হলে একদিন সকলের সামনে তুলসীর একটি হাঁড়ি ভেঙ্গে দেন জামাই। কিন্তু এই পাত্র একটি সুস্বাদু উপাদেয় খাদ্যে পরিপূর্ণ হয় শুধু তাই নয়, অলংকারের বদলে তুলসী পাতা দিয়ে জামাইকে মালা পরানো হলে কিন্তু সেটাও সোনার অলঙ্কার হয়ে গেল। এসব ঘটনা দেখে সবাই চমকে গেল। তারপর থেকে সবাই তুলসী পূজা শুরু করে।