বছরখানেক আগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য। তারইমধ্যে মুর্শিদাবাদের সুতির গোঠা এ রহমান হাইস্কুলে ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়িয়েছিল। সেই অভিযোগে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং তাঁর ছেলে তথা ভুয়ো শিক্ষককে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তা নিয়ে বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ওই স্কুলের এক শিক্ষক এবং এক ক্লার্ক ইস্তফা দিয়েছেন। এই নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: আদালতের নির্দেশে আরও ৪০ জন জালি শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করল SSC, সঙ্গে OMR শিট
জানা গিয়েছে, শিক্ষকের নাম আবদুল রাকিব এবং ক্লার্কের নাম আবদুল রাহিদ। আবদুল রাকিব ওই স্কুলের একজন সহকারী শিক্ষক। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা দুজনে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন। এর মধ্যে ওই ক্লার্ক এক বছর ধরে ঠিকমতো স্কুলে আসছিলেন না। তারপরে হঠাৎ করে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। তবে ওই শিক্ষক স্কুলে আসতেন। সেক্ষেত্রে তাঁদেরও বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল কিনা, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষক সুতির শেরপুরের বাসিন্দা। ২০১১ সাল থেকে তিনি ওই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। ঠিক পরের বছর করণিক পদে যোগ দিয়েছিলেন আবদুল রাহিদ। জেলা স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছেন, স্কুলের তরফে জানতে পেরেছেন যে দুজনে ইস্তফা দিয়েছেন। তবে কী কারণে তাঁরা ইস্তফা দিয়েছেন, সে বিষয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, সোমা রায় নামে এক চাকরি প্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভূগোলের শিক্ষক অরিন্দম মাইতির নিয়োগের মেমো নম্বর জাল করে চাকরি পেয়েছিলেন অনিমেষ তিওয়ারি। এমনকী ৩ বছর তিনি বেতনও পেয়েছেন। সেই মামলায় প্রথমে অনিমেষের বেতন বন্ধ করেন কলকাতায় হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং পরে ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেন রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডিকে। সেই মামলায় স্কুলের কর্মী এবং ডিআই অফিসের আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসহযোগিতা করেছিলেন আশিস তিওয়ারি। তাই তাঁকে গ্রেফতার করে সিআইডি। পরে অনিমেষকেও গ্রেফতার করে। তবে তারা এখন জামিনে আছেন। বিচারপতি এই মামলায় সিআইডির তদন্ত নিয়ে বহুবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এই মামলায় প্রাক্তন ডিআইকেও গ্রেফতার করা হয়। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নিয়োগকাণ্ডে ওই শিক্ষক ও ওই করণিককে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। আর তারপরেই এই ইস্তফা ঘিরে উঠেছে প্রশ্ন।