ভারতীয় টি২০ দলে সুযোগ হয়নি রিঙ্কু সিংয়ের। বিগত কয়েক মাসের যা পারফরমেন্স তাতে সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করবেন যে এই দলের ফিনিশারের ভূমিকায় রিঙ্কু সিংই প্রধান ভরসা হতে পারতেন। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফরমেন্স করে আসা সত্বেও সেই রিঙ্কুকে দলে নেয়নি নির্বাচকরা। বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ তাঁর। তবে তাঁর থেকেও বোধহয় বেশি মন খারাপ ক্রিকেটপ্রেমীদের। কারণ সাদামাটা এই ছেলের ব্যাটিংয়ের ফ্যান যে সকলেই। বিগত কয়েক মাসে যখনই সুযোগ পেয়েছেন নিচের দিকে নেমে দুরন্ত ব্যাটিং করেছেন। কেউ দেখে বলবে না তাঁর পারফরমেন্সে গলদ রয়েছে। এবারের আইপিএলে সেভাবে সুযোগ পাননি। সেটাই বোধহয় কাল হল উত্তর প্রদেশের আলিগড়ের এই ছেলের।
বিশেষজ্ঞদের মতে রিঙ্কুর দল থেকে বাদ যাওয়ার কারণ বর্তমান আইপিএলের ইমপ্যাক্ট রুল। কারণ এই নিয়মের সৌজন্যে অলরাউন্ডাররা বোলিং ছেড়ে মনোনিবেশ করেছেন ব্যাটিংয়ে। এছাড়া ব্যাটারও সংখ্যায় বেশি খেলানো যাচ্ছে। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সে রিঙ্কু বরাবরই একটু নিচের দিকে নামেন। তাঁর আগেই অংকৃষ রঘুবংশী নামেন, অথচ তিনি ইমপ্যাক্ট সাব হিসেবেই সচরাচর নামেন। এই নিয়ম না থাকলে রিঙ্কু অন্তত এক ধাপ আগে আসতে পারলেন। শ্রেয়স আইয়ার, ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে নাইট টিম ম্যানেজমেন্ট টপ অর্ডারে পাঠায়। এরপর রাসেল। ফলে শেষদিকে রিঙ্কুর হাতে বেশি বলও থাকত না। আইপিএলের সৌজন্য শিবম দুবে, সঞ্জু স্যামসন যেখানে নিজেদের চেনানোর সুযোগ পেলেন, সেখানে রিঙ্কু পারফরমেন্স করা সত্বেও সেই প্রাপ্য় সুযোগ থেকেই হয়ত বঞ্চিত হলেন।
এবারের আইপিএলে রিঙ্কু সিং খেলেছেন মাত্র ৮২ বল। করেছেন ১২৩ রান। স্ট্রাইক রেট ১৫০। অর্থাৎ ম্যাচ পিছু ১০টি করেও বল খেলতে পারেননি। যদি টপ অর্ডারে তিন বা চারেও তিনি খেলার সুযোগ পেতেন তাহলে হয়ত আইপিএলের মঞ্চে নিজের ধারাবাহিকতা দেখানোর প্রাপ্য সুযোগ পেতেন তিনি। সূত্রের খবর বোর্ডের নির্বাচক কমিটির বৈঠকেও আলোচনা হয়, শিবম দুবে এবং হার্দিক পান্ডিয়ার পাশাপাশি স্কোয়াডে রিঙ্কুকে রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। সেই কারণেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। বোর্ডের এক কর্তা জানিয়েছেন, হার্দিকই একমাত্র অলরাউন্ডার যে সিম বোলিং করতে পারে। তাই ওকে বাদ দেওয়া যায়নি। ফলে রিঙ্কুকেই বাদ পড়তে হয়েছে। রিঙ্কু যেখানে ম্যাচ পিছু ১০টা বলও খেলেননি সেখানে সিএসকেতে মহেন্দ্র সিং ধোনির সৌজন্যে আরও ক্ষুরধার হয়ে উঠেছেন শিবম দুবে। এবারের আইপিএলে ২০৩টি বল খেলেছেন শিবম, সেখানে ২৪টি বাউন্ডারি এবং ২৬টি ওভারবাউন্ডারি মেরেছেন তিনি।
নির্বাচকরা অবশ্যই আশা করবেন রিঙ্কুর জন্য পরবর্তীতে পস্তাতে হবে না দলকে। যদিও ২৩মে পর্যন্ত নির্বাচকদের হাতে সময় আছে, যদি তাঁরা মনে করেন দলে পরিবর্তন আনতে পারেন। রিজার্ভ স্কোয়াডে থাকায় ১৫ জনের দলের কেউ চোট পেলে, রিঙ্কু সেক্ষেত্রে স্কোয়াডে ঢুকতে পারেন। জাতীয় দলের জার্সিতে ১৫ ম্যাচে ১৭৬-এর স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন উত্তর প্রদেশ থেকে উঠে আসা এই বাঁহাতি ব্যাটার।