মিজোরামে ব্রিজ দুর্ঘটনায় মালদা জেলার কমপক্ষে ২৫ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একই পরিবারের পাঁচ জন পুরুষ মারা গিয়েছেন। এর ফলে পুরুষ শূন্য গোটা পরিবার। পরিবারে রোজগেরে বলে তাঁরাই ছিলেন। ফলে কী ভাবে পেট চলবে তা নিয়েই তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন শোকাহত পরিবার।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মালদায় কমপক্ষে ২৫ জন শ্রমিকের মৃ্ত্যু হয়েছে। এরা প্রত্যেকে মিজোরামে নির্মীয়মান রেল ব্রিজ তৈরির কাজে গিয়েছিলেন। হঠাৎ ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় চাপা পড়েন শ্রমিকরা। মালদার যাঁরা মারা গিয়েছেন তাদের অধিকাংশের বাড়ি তুয়া ২ ব্লকের পুখুরিয়া থানার কোকলামারি চৌদুয়ার গ্রামে। গ্রামবাসীদের দাবি, প্রায় ৩০ জন গ্রাম থেকে ওই ব্রিজের কাজে গিয়েছিলেন মিজোরাম গিয়েছিলেন। তাই মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেন মনে করছেন তারা গ্রামবাসীরা।
ওই গ্রামেই একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত সইদুর আলমের দাদা জানিয়েছেন, ব্রিজের কাজে যাওয়ার আগে তাঁকে তিনি জানিয়েছিলেন, জমি-জায়গা নেই, তাই খেটেই রোজগার করে মেয়েদের লেখাপড়া করিয়ে বিয়ে দিত হবে। তাঁর সঙ্গে পরিবারের আরও চারজন গিয়েছিলেন ব্রিজের কাজ করতে। তাঁদের প্রত্যেকের বয়স কুড়ি থেকে তিরিশের মধ্যে। এই মৃত্যুতে গ্রাম জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গ্রামের কোনও বাড়িতে জ্বলেনি উনুন। শুধু ভেসে আসছে কান্নার রোল।
(পড়তে পারেন। '৫ লাখ দিচ্ছি, ব্যবসা করুন', ভিনরাজ্যে থাকা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার অনুরোধ মমতার)
কোকলামারী চৌদুয়ার গ্রাম ছাড়াও, মালদার ইংরেজবাজার, কালিয়াচক ব্লক থেকে অনেক শ্রমিক মিজোরামে গিয়েছিলেন।
গ্রামবাসীদের অনেকে জানাচ্ছেন, গ্রামে সে ভাবে কাজ নেই। যা কাজ পাওয়া যায় তার মজুরিও অনেকটাই কম। তা ছাড়া পরিশ্রম করে ঠিকমতো মজুরিও পাওয়া যায় না। সে জন্য গ্রামের মানুষ বাধ্য হয়ে অন্যত্র কাজে যায়।
যদিও এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিনরাজ্যে কাজ করা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার অনুরোধ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এখানে এসে নিজেদের ছোট ব্যবসা চালু করুন।' পাশাপাশি মমতা জানান, রাজ্য সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের একটা তালিকা তৈরির চেষ্টা করছে। আসন্ন দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে সেই সংক্রান্ত কাজ করা হবে।