অনেকদিন ধরেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনরা তরুণীর ওপর নানা অত্যাচার চালাচ্ছিল। কিন্তু আর সহ্য করতে পারলেন না তরুণী। চলন্ত ট্রেন থেকে আত্মহত্যা করে নিজের জীবন বলি দিল সে। দাদার সামনেই চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেয় সে। তরুণীর এই আচমকা মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার।
জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল পুরুলিয়ার গড় জয়পুরের বাসিন্দা ঝুনপুকির সঙ্গে বিয়ে হয় পাহাড়গোড়া রামপুরের বাসিন্দা ভোলানাথ গড়াইয়ের। ঝুনপুকির বাবার বাড়ির তরফে অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে নানাভাবে ঝুনপুকির ওপর অত্যাচার চালানো হত। কয়েকদিন আগেও দাদা রাহুলকে মেসেজ করে ঝুনপুকি জানিয়েছিল, তাঁর ওপর নির্যাতন করছে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তখন রাহুল বুঝতে পারেনি হয়ত, তাঁর বোন এমন একটা কাণ্ড ঘটিয়ে বসবে। বোনের মেসেজ পেয়ে তাঁর কাছে ছুটে যান রাহুল। বোনকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়েও আসছিলেন গত রবিবার। ট্রেনটি যখন পুরুলিয়ার জয়পুর স্টেশনে ঢুকছে, তখন আচমকাই ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন তরুণী। সেখানে ডবল লাইনের কাজ হওয়ায় বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছিল। সেই বাঁশের বেড়ার ওপরই পড়ে যান ঝুনপুকি। চোখের সামনে ঘটনাটি দেখে হতবাক হয়ে যান রাহুল।
এরপর চাষ রোড স্টেশনে নেমে দৌড়ে এসে বোনকে নিয়ে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় রাহুল। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই ঝুনপুকির মৃত্যু হয়েছে। রাহুলের অভিযোগ, ‘আমার বোনকে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি সবাই মিলে অত্যাচার করত। অতিরিক্ত পণের দাবিতেই এই নির্যাতন করা হত। বোনকে ফোন পর্যন্ত করতে দিত না। দিনের পর দিন নির্যাতনের মাত্রা বাড়ছিল। শ্বশুরবাড়ি লোকেদের মানসিক অত্যাচারে আমার ফুটফুটে বোনটার জীবন শেষ করে দিল।’ বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের নামে জয়পুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে দাদা রাহুল। জয়পুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, যেহেতু ঘটনাটি নিতুড়িয়া থানার অধীনে ঘটেছে, সেখানেই অভিযোগটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।