সন্দেশখালিতে জনগর্জনে ফের ছারখার হল ২ তৃণমূল নেতার গেরস্থ। অজিত মাইতি গ্রেফতার হতেই জনরোষ আছড়ে পড়ল তৃণমূলের নব নিযুক্ত অঞ্চল কমিটির আহ্বায়ক হলধর আড়ি ও পঞ্চায়েত সদস্য শংকর সরদারের ওপর। সোমবার সকালে বেড়মজুর গ্রামের বাসিন্দারা এই ২ তৃণমূল নেতার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। গ্রামবাসীদের দাবি, এই ২ তৃণমূল নেতা তাঁদের ওপর দিনের পর দিন নির্যাতন চালিয়েছেন। দখল করে নিয়েছেন তাঁদের জমি।
আরও পড়ুন: ঘরে ঢুকে পরপর গুলি, খুন তৃণমূলের উপপ্রধান, অভিযোগের তির জমি ব্যবসায়ীর দিকে
এদিন সকালে প্রথমে হলধর আড়ি বাড়ির খড়ের গাদা জ্বলতে দেখা যায়। রবিবারই তাঁকে বেড়মজুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির আহ্বায়ক ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। হলধরবাবু বলেন, আমি গরুর পরিচর্যা করতে খামার বাড়িতে গিয়েছিলাম। বাড়ি ফিরে দেখি খড়ের গাদা জ্বলছে। কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে জানি না।
বেলা বাড়তে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শংকর সরদারের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন প্রতিবাদীরা। পরিবারের সদস্যদের দাবি, শংকরবাবুর দিদি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁকে দেখতে এদিন সকালে বেরিয়েছিলেন তিনি। তার মধ্যেই বাড়িতে এসে হাজির হন গ্রামবাসীরা। শংকরকে বাইরে বার করে দিতে বলেন তাঁরা। গ্রামবাসীদের দাবি, শংকরবাবুকে বাড়িতেই লুকিয়ে রেখেছে পুলিশ।
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন, দিনের পর দিন গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছেন এই ২ নেতা। নদীর পাড়ে যে খাস জমি চাষ করে খেতে গ্রামবাসীদের একাংশ তা নথি জাল করে দখল করে নিয়েছেন তিনি। ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে নিয়েছেন তিনি। এমনকী প্রতিবাদ করলে সরকারি সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতেন তাঁরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। শংকর সরদারকে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে বলে দাবি জানাচ্ছেন তারা।
আরও পড়ুন: রাতে হয়েছিলেন আটক, সকাল হতেই গ্রেফতার বেড়মজুরের তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি
রবিবার একই ভাবে গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে প্রাণ বাঁচাতে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তৃণমূলের অপসারিত অঞ্চল সভাপতি অজিত মাইতি। তার পর সেই বাড়ি ঘিরে ঝাঁটা হাতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ আধিকারিকরা পৌঁছে অজিতবাবুকে বারবার ওই বাড়ি থেকে বেরোতে অনুরোধ করলেও তিনি সেই সাহস দেখাননি। অবশেষে সন্ধে নামলে বিক্ষোভকারীরা এলাকা ছাড়তে শুরু করলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। অজিতবাবুকে আটক করে থানায় নিয়ে যান পুলিশ আধিকারিকরা। সকালে জানা যায়, তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গ্রামবাসীদের জমি দখল করে সিরাজের হাতে তুলে দিয়েছেন অজিত।