কয়েকদিন আগেই তাঁর বাড়িতে হামলা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর স্ত্রী এবং কন্যার শ্লীলতাহানি হয়েছিল। এই সবের মাঝেই বেড়মজুর ১ নম্বর অঞ্চল সভাপতি করা হয় অজিত মাইতিকে। এরপর রবিবার ফের অজিত মাইতিকে ধাওয়া করে সাধারণ মানুষ। মারমুখি জনতা থেকে বাঁচতে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে প্রায় ৪ ঘণ্টা লুকিয়ে থাকেন অজিত মাইতি। পরে তাঁকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। আর আজ সকালে গ্রেফতার করা হল অজিত মাইতিকে। উল্লেখ্য, শেখ সিরাজউদ্দিনকে সরিয়ে শনিবারই তাঁকে বেড়মজুর ১ নম্বর অঞ্চল সভাপতি করা হয়েছে বলে ঘোষণা করে এসেছিলেন রাজ্যের ২ মন্ত্রী। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই অজিতকে পদ থেকে সরায় দল। পাশাপাশি জানিয়ে দেওয়া হয়, অজিতের পাশে দল নেই। এই আবহে আজ গ্রেফতার করা হল অজিত মাইতিকে। (আরও পড়ুন: সিংহের নাম নিয়ে HC-র বকুনি, বাংলার 'সীতা-আকবর' বিতর্কে সাসপেন্ড ত্রিপুরার অফিসার)
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের মান ভাঙাতে বড় সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর, বোঝা বাড়বে রাজ্যেরই?
গতকাল সন্ধ্যায় অজিতকে আটক করে মিনাখাঁ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এর আগে 'স্বেচ্ছাবন্দি' অবস্থায় অজিত মাইতি দাবি করেন, ২০১৯ সালে তাঁকে তৃণমূলে যোগ দান করানো হয়েছিল মারধর করে। সব দুর্নীতির দায় তিনি শেখ সিরাজউদ্দিনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন অজিত। এরপর শাহজাহান, সিরাজের পর অজিত মাইতির মাথার ওপর থেকেও হাত তুলে নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। অজিতকে নিয়ে পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে তাদের পাশে দল নেই।’
পার্থ ভৌমিকদের বৈঠকে অংশগ্রহণের পর বাড়ি ফেরার সময় অজিত মাইতিকে তাড়া করেন মহিলারা। প্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে তালা দিয়ে দেন তিনি। তখন বাড়িতে কেউ ছিল না। এদিকে সেই বাড়ির মালিক তখন পুকুরে গিয়েছিলেন। তবে ফিরে এসে নিজের বাড়িতেই ঢুকতে পারেননি সেই বৃদ্ধ। ওদিকে অজিত মাইতিকে গ্রেফতার করার দাবিতে তখন বাইরে স্লোগান তুলতে থাকেন মহিলারা। এই আবহে ৪ ঘণ্টা নিজেকে সেখানেই আটকে রাখেন অজিত মাইতি।
সেই অবস্থায় অজিত মাইতি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'লোকে আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ করছে। আমাকে ২০১৯ সালে মারধর করে সিরাজ ডাক্তারের লোকজন তৃণমূলে যোগদান করতে বাধ্য করেছিল। কিন্তু ওদের জমি দখলের ব্যাপারটা আমি জানতাম না। শেখ শাহজাহান, সিরাজদের সঙ্গে থেকে আমিও পচা আলু হয়ে গিয়েছি। আমি দলের পথে থাকতে চাই না। আমি আজই পদত্যাগ করব।' এদিকে অজিতের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পার্থ ভৌমিক বলেন, 'ও আবার কবে অঞ্চল সভাপতি হল? ওখানে অন্যদের দায়িত্ব দিয়েছে দল। যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে তাদের পাশে দল থাকবে না। মানুষের ওপর অত্যাচার করলে বিক্ষোভ তো হবেই। কিন্তু কেউ যেন আইন হাতে তুলে না নেন।'
এদিকে এই পরিস্থিতিতে বেশ কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ঘটনাস্থলে যান ডিআইজি বারাসত রেঞ্জ ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও বসিরহাটের এসপি মেহেদি হাসান। এরপর পুলিশ আধিকারিকরা অজিতকে আটক করে সরু গলি দিয়ে দ্রুত গাড়িতে তুলে রওনা দেন। অজিতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে আজ সকালে অজিত মাইতিকে গ্রেফতার করা হয়।