নার্সকে দিয়ে সন্তান প্রসব করানোর অভিযোগ উঠল রাজ্যের একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। আর তারপরেই মৃত্যু হল সদ্যোজাতর। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ দেখান রোগী পরিবারের সদস্যরা। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, শিশুর শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। জন্মের আগে থেকেই শিশুর হৃদযন্ত্রে সমস্যা ছিল। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই তার মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: আবার এক শিশুর মৃত্যু বিসি রায় হাসপাতালে, আতঙ্কের নাম অ্যাডিনোভাইরাস
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নন্দিতা মান্না। তিনি পাঁশকুড়া ব্লকের অর্ন্তগত চৈতন্যপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নরভেদীচক এলাকার বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাত ৮টার সময় তিনি সন্তানের জন্ম দেন। নন্দিতা মান্নার স্বামীর অভিযোগ, ডেলিভারির সময় কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। ফলে নার্সরা ওই শিশুর প্রসব করান। তবে জন্মের ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই মৃত্যু হয় সদ্যোজাতর। পরিবারের অভিযোগ, নার্স দিয়ে ডেলিভারি করানোর ফলে সদ্যোজাতর মৃত্যু হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ মানতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, মহিলার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। তাছাড়া, শিশুটির শারীরিক অবস্থাও ভালো ছিল না। পরিবারকে সেকথা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জন্মের পর থেকে শিশুর হার্টবিট স্বাভাবিকের থেকে অনেক কম ছিল। ফলে শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
এই ঘটনা পরেই ক্ষোভে ফেটে ওঠেন নন্দিতার পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, এই হাসপাতাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হলেও সেখানে সব সময় চিকিৎসকদের পাওয়া যায় না। ফলে হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা করে থাকেন নার্সরা। তাঁরা রোগী এবং রোগী পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ তুলেছেন নন্দিতার পরিবার। তবে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ ওঠায় স্বাভাবিকভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও এই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছিল। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক শিশুকে অন্য রোগীর ইঞ্জেকশন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন শিশুর বাবা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে। জানা যায়, মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই শিশু দিব্যাংশু সামন্ত জন্ম থেকেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। একমাস অন্তর তাকে এক ইউনিট করে রক্ত দিতে হয়। সেই সময় অন্য রোগীর ইঞ্জেকশন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।