রাত পোহালেই সোমবার বিশ্বকর্মা পুজো। কিন্তু তার মধ্যেই নেমে এল অন্ধকার। এক লহমায় চওড়া হাসি মিলিয়ে যেতে দেখা গেল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। কারণ সেখানে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। আজ, রবিবারও কারখানা বন্ধের খবর সামনে চলে এসেছে। দু’মাস আগে বন্ধ হয়েছিল মিল। দুর্গাপুজোর আগে বেতন না পেয়ে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বকর্মা পুজো যে একপ্রকার জৌলুস হারাচ্ছে সেখানে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আজও একটি জুটমিল এখানে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপুল পরিমাণ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়লেন।
এদিকে আজ, রবিবার ভাটপাড়া রিলায়েন্স জুটমিল বন্ধ হয়ে গেল। আর তার জেরে কর্মহীন হয়ে পড়লেন প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক। দু’মাস আগে বন্ধ হয়ে যায় অন্নপূর্ণা জুটমিল। এই পর পর বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে শিল্পাঞ্চলের ছবিটা পাল্টে যাচ্ছে। কারখানা বন্ধে বেকার হয়ে পড়ছেন শ্রমিকরা। তাই বিশ্বকর্মা পুজো হোক বা দুর্গাপুজো কোনও কিছুই পালন করা যাচ্ছে না। কারখানা বন্ধ নিয়ে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘আজকের দিনে আমরা ব্যস্ত থাকতাম। ছেলেমেয়েদের নতুন জামা কিনে দিতাম। এই পুজোই আমাদের কাছে ছিল উৎসবের সমান। আর আজ কারখানা বন্ধ। তাই পুজো হবে না। সংসার চলবে কেমন করে বুঝতে পারছি না।’
অন্যদিকে যেসব কলকারখানা চলছে সেগুলিও ধিক ধিক করে। বিশ্বকর্মা পুজো বলতে শিল্পাঞ্চলকেই উদাহরণ দেওয়া হতো। সেখানে এখন কলকারখানা বন্ধ হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে জুটমিলগুলিতে। একের পর এক কলকারাখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার জেরেই জৌলুস হারিয়েছে শ্রমিকদের বিশ্বকর্মা পুজোয়। এখন আর সেই আনন্দ নেই। বরং বিষাদ। বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন শ্রমিকরা ব্যস্ত থাকতেন— ঠাকুর আনা, বাজার করা, ভোগ রান্না–সহ নানা কাজে। আজ সেই ব্যস্ততা নেই। চারিদিক যেন অন্ধকার।
আরও পড়ুন: ছুটির দিনে জেলাশাসকদের তলব করে বৈঠক, ডেঙ্গি–ম্যালেরিয়া ঠেকাতে উদ্যোগ
ঠিক কী বলছেন সাংসদ? এই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরেছেন। তিনি এই খবর শুনে বলেন, ‘কিছু কারখানা বাম আমলেই বন্ধ গিয়েছিল। এখন কিছু কারখানা বন্ধ হয়েছে। তবে সেগুলি খোলার চেষ্টাও চলছে। জুট শিল্পের ভবিষ্যত খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এটা রাজ্য সরকারের একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। জুট মিলগুলির মালিক পক্ষ কন্ট্রাক্টারি রাজ চালু করার ফলেই আজ পাট শিল্প ধুঁকছে। এই ঠিকাদারি প্রথা শেষ না হলে জুট শিল্পটাই শেষ হয়ে যাবে।’