বছরের শেষ সপ্তাহের শুরুর দিকটা বীরভূমেই কাটাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার প্রথমে প্রশাসনিক পর্যালোচনা, তার পর রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। মঙ্গলবার বোলপুর শহরে রোড শো করবেন মমতা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম সফরের আগেই ‘শিল্প না হলে জমি ফেরত’–এর দাবি তুলে বোলপুরের অধিগৃহীত জমিতে পড়ল পোস্টার। একইসঙ্গে এদিন শিল্পের দাবিতে বিক্ষোভও দেখান বোলপুরের শিবপুর এলাকার জমিহারা কৃষকরা।
এদিন এলাকা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়া পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘বিশ্বভারতীর পাশেই বিশ্ববিদ্যালয় বানানোর নামে কবিগুরুর স্বপ্নের অপমান মানছি না’, ‘শিল্পের নামে প্রোমোটারি চালানো দুর্নীতিবাজ সরকার চাই না’, ‘চাষির বুকের ওপর বানানো পাঁচিল ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’। আর প্রতিটি পোস্টার পড়েছেন ‘শিবপুর জমিহারা কৃষক সংগ্রাম মঞ্চ’–এর নামে।
কিন্তু কী কারণে এই ক্ষোভ? বাম আমলে শিল্পের জন্য বীরভূমের বোলপুরের শিবপুর এলাকার ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন যে ওই জমিতে শিল্প নয়, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় ও গীতবিতান টাউনশিপ তৈরি হবে। এর পরই বেঁকে বসেন জমিদাতা কৃষকরা। দীর্ঘদিন ধরে শিল্পের দাবিতে বিক্ষোভও দেখিয়ে চলেছেন তাঁরা। এবার মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম সফরের আগে সেই বিক্ষোভই নতুন করে অক্সিজেন পেল বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।
কৃষকদের দাবি, শিল্প করা হবে বলে জমি নেওয়া হয়েছিল। তাই ওখানে শিল্পই চাই। যদি তা না হয় তবে জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বোলপুরে আসার পর তাঁর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য সাক্ষাৎ করতেও চেয়েছেন জমিদাতা কৃষকরা। আর তাঁদের দাবি না মানা হলে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে, কৃষকদের এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে নতুন করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। শিল্প কেন হচ্ছে না এই প্রশ্নের উত্তের স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছেন, কল–কারখানা গড়ে উঠলে তার জেরে দূষণ হবে। তার চেয়ে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক ভাল। এ কথার প্রতিক্রিয়ায় বাম নেতৃত্ব বলেন, শিল্প হলে অনেক কর্মসংস্থান হবে। তৃণমূলের মুখে দূষণের কথা মানায় না। এদিকে, বিজেপি–র কটাক্ষ, গীতবিতান টাউনশিপ তৈরির নামে ধাপ্পাবাজি করছে শাসকদল।