আজ (বুধবার) সকাল থেকে ফের দর্শনার্থীদের জন্য খুলে গেল বেলুড় মঠের দরজা। একই সঙ্গে আজ থেকেই তারকেশ্বর মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের অনুমতি দিল পরিচালন কর্তৃপক্ষ। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে টানা ১৯২ দিন দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল বেলুড় মঠে। তবে বেলুড় মঠের দরজা খুললেও পালন করতে হবে একাধিক বিধিনিষেধ। রামকৃষ্ণ মন্দির, শ্রীমা সারদা মন্দির, স্বামী বিবেকানন্দ মন্দির ও ব্রহ্মনন্দ মন্দির দর্শন করা যাবে। তবে দর্শন করেই বেরিয়ে আসতে হবে, ভিতরে বসা যাবে না। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা যাবে না সন্ন্যাসীদের। প্রসাদ বিতরণ আপাতত বন্ধ। মঠের ঘাট দিয়ে গঙ্গায় নামা ও স্নানেও নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে।
সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে সকাল ১১ টা এবং দুপুর সাড়ে ৩ টে থেকে বিকেল ৫ টা ১৫ মিনিট, দিনের দুটি নির্দিষ্ট সময়ে ঢোকা যাবে বেলুড় মঠে। এছাড়াও বেলুড় মঠের চারটি গেস্ট হাউসে অতিথিদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতিতে ২৫ মার্চ থেকে বন্ধ বেলুড় মঠ। ১৫ জুন মঠ খুললেও, ৮০ জনের বেশি সন্ন্যাসী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ফের ১ অগস্ট থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বেলুড় মঠ। কোভিড সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায়, বুধবার থেকে ফের খুলে গেল মঠ। মঠ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন পরিস্থিতি দেখে ধীরে ধীরে বিধিনিষেধ লঘু করা হতে পারে।
এদিকে শিব চতুর্দশীর মাসখানেক আগে আজ থেকে খুলে গিয়েছে তারকেশ্বর মন্দিরের গর্ভগৃহ। করোনা আবহে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পাঁচ মাস আগে মন্দির খোলে। কিন্তু গর্ভগৃহে প্রবেশের করতে পারছিলেন না পুণ্যার্থীরা। তবে করোনা বিধি মেনেই গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে হবে। শুধুমাত্র ফুল, বেলপাতা, ও জল নিয়ে প্রবেশ করা যাবে। জ্বালানো যাবে না ধূপ–মোমবাতি। গর্ভগৃহে একেবারে ২০ জন করে দর্শনার্থীকে ঢোকানো হবে। করোনা সংক্রমণের জেরে চার মাস বন্ধ থাকার পর ২৫ জুন মাসে একদিনের জন্য খুলেছিল তারকেশ্বর মন্দির। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বন্ধ হয়ে যায় মন্দিরের দরজা। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর মন্দির খুললেও বন্ধ ছিল মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ। আজ থেকেই সেই গর্ভগৃহ খুলে গেল পুণ্যার্থীদের জন্য।
অন্যদিকে গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে গতবছরের ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল মন্দির। বন্ধ ছিল গাজন মেলা, শ্রাবণী মেলা। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে ১ জুন থেকে বেশ কিছু ধর্মীয় স্থান খুললেও বন্ধই ছিল তারকেশ্বর মন্দির। এবার তা খুলে যাওয়ায় খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে পুরোহিতরা। করোনা পরিস্থিতিতে প্রশাসনকেও সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন মোহন্ত মহারাজ। মন্দিরে রয়েছেন ১০৪ জন পুরোহিত। প্রদর্শক ও সহকারী পরিদর্শক মিলিয়ে রয়েছেন ৪৬৫ জন। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সকলেই। ফলে এখন শুরু হয়েছে জোরকদমে পুজোপাঠ।