‘ভোকাল ফর লোকাল’-এর ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই স্লোগানের বাস্তবায়ন করল পশ্চিমবঙ্গ। চিনের একটি জনপ্রিয় স্ক্যান অ্যাপের উপর কেন্দ্র নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পর নয়া স্ক্যান অ্যাপ নিয়ে এল রাজ্য সরকার। নাম ‘সেল্ফ স্ক্যান’।
সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা আজ একটা কাজ করতে চলেছি। আশা করি, আমরা যুব প্রজন্মের এটা খুব কাজে লাগবে। আমরা সম্প্রতি শুনছিলেন, এই স্ক্যান, ওই স্ক্যান, ওই দেশের স্ক্যান - সেটা আমরা আদৌও ব্য়বহার করব কিনা।'
সেই শঙ্কা দূর করার জন্য রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতর নয়া অ্যাপ তৈরি করেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নথিপত্র স্ক্যান করা যাবে। মমতা বলেন, ‘এটা আইটি দফতর করেছে। রাজীব কুমার এবং অন্যান্যদের ধন্যবাদ। আমরা রাজ্যের তৈরি করা একটি অ্যাপ - সেলফ স্ক্যানের সূচনা করলাম আজ। নিজেদের উপরই ভরসা করুন। বাইরে যাওয়ার দরকার নেই।’
সেই অ্যাপে কী কী সুবিধা মিলবে, সেই ব্যাখ্যাও দেন মমতা। পাশাপাশি সেই অ্যাপে গোপনীয়তা সম্পূর্ণ বজায় থাকবে। তথ্যচুরির কোনও ভয় নেই বলে আশস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'এখন যে অ্যাপগুলি পাওয়া যায়, তার থেকে রাজ্যের নয়া অ্যাপ অনেক বেশি উন্নত, সুবিধাজনক এবং সুরক্ষিত। এটিতে স্ক্যান করা, নথি এডিট করা হয়। এখানে ব্যবহৃত কোনও নথি বা তথ্য সার্ভারে জমা হয় না। অর্থাৎ এটা পুরোপুরি সুরক্ষিত। ব্যবহারকারীর মোবাইলেই থাকে। কিন্তু সার্ভারে জমা হয় না। এটা একদম ব্যক্তিগত এবং নিরাপদ অ্যাপ। এটি একদম ফ্রি এবং কোনও বিজ্ঞাপন নেই। অ্যাপটি সম্পূর্ণভাবে আমাদের বাংলার আইটি দফতর তৈরি করেছে। আমি সকলকে অভিনন্দন বলছি, কোন স্ক্যান (অ্যাপ) ব্যবহার করবেন, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে, সেই তর্ক-বিতর্কের মধ্যে না গিয়ে আমি নিশ্চয়ই চাই আমার দেশের (অ্য়াপ)টাই ব্যবহৃত হোক। স্ক্যান মানেই সেলফ স্ক্যান।'
মমতা দাবি করেন, দেশের মধ্যে এই প্রথম কোনও রাজ্য সরকার নিজেদের স্ক্যান অ্যাপের সূচনা করল। তাঁর কথায়, ‘আমরাই মনে হয়, বাংলা প্রথম, মনে হয়, আমাদের সমস্যা হচ্ছে, আমরা কৃতিত্ব নিতে পারি না। কৃতিত্বটা কখনও কখনও গৌরবের সঙ্গে নিতে হয়।’ মমতার সেই কথায় খোঁচটা যে কোনদিকে ছিল, তা বুঝতে কারোর অসুবিধা হয়নি। শেষের দিকে তা আরও স্পষ্ট করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে হালকা খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, ‘স্বদেশিয়ানা কাকে বলে (এবার শেখাবে বাংলা)। আমি মনে করি, হোয়াট বেঙ্গল থিঙ্কস টুডে, ওয়ার্ল্ড থিঙ্কস টুমরো।’