পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রামবাংলায় সন্ত্রাস হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত, তৃণমূলের সবাই চোর, গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, ৩৫৫ কার্যকর করা দরকার— এগুলি বঙ্গ–বিজেপি নেতাদের মুখে শোনা যাচ্ছে। আর স্বয়ং দেশের রাষ্ট্রপতি বাংলার ১১টি জেলাকে ‘ভূমি সম্মান’ দিয়ে ভূষিত করলেন। সুতরাং বঙ্গ–বিজেপির তোলা দাবিগুলি কার্যত খারিজ হয়ে গেল। কারণ যে সরকার জেলার উন্নয়নের জন্য পুরষ্কার পায় সেই সরকার জেলায় সন্ত্রাস করে এটা বাংলার মানুষ মানতে নারাজ। এই খবর প্রকাশ্যে আসায় বিজেপি নেতাদের ব্যথা বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন এমন সম্মান পেল বাংলা? কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আগেও বহু দফতর প্রশংসিত হয়েছে। নানা পুরষ্কারও পেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার প্রত্যেক জেলায় ভূমি সংক্রান্ত কাজ—জমির নথিভুক্তিকরণ, ভূমি কর সম্পর্কিত মানচিত্র, জমির রেকর্ড–সহ আরও অনেক কাজ ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। তাতে একদিকে এসেছে স্বচ্ছতা, অন্যদিকে মানুষ পেয়েছে দ্রুত পরিষেবা। যেসব রাজ্য এই কাজ সফলভাবে করে তাদেরই এই সম্মান দেওয়া হয়। এবার দেশের মোট ৭৫টি জেলাকে এই সম্মান দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। যার মধ্যে ১১টি জেলা অর্থাৎ প্রায় ১৫ শতাংশই বাংলার।
আর কী জানা যাচ্ছে? এদিকে সূত্রের খবর, বাংলার জেলা হাওড়া, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া–সহ মোট ১১টি জেলায় ১০০ শতাংশ ডিজিটালাইজেশনের কাজ হয়ে গিয়েছে। এই কাজ করে মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার দুয়ার খুলে গিয়েছে। তার জন্যই এদিন এই জেলাগুলিকে সম্মানিত করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সেখানে এই সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে শান্তি মিছিল করার ডাক দিয়েছে বিজেপি। তবে এই খবর পেয়ে তাঁদের খারাপ লেগেছে। আগে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে প্ল্যাটিনাম পুরষ্কার পেয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প। আবার কেন্দ্রের ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি দফতর ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ পুরষ্কারের ‘পাবলিক প্ল্যাটফর্ম’ বিভাগে প্ল্যাটিনাম পুরষ্কার দিয়েছে বাংলাকে। একটা সরকার কাজ না করলে এই পুরষ্কার ঝুলিতে আসে না। এবার তাতে আরও একটি পালক যুক্ত হল।
আরও পড়ুন: ‘মোদীজিকে দেখে মমতাদির শেখা উচিত’, দেগঙ্গায় হতাশ হয়ে আমতায় মন্তব্য বিজেপি সাংসদদের
ঠিক কী বলেছেন রাষ্ট্রপতি? মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে এই সম্মান নিয়েছেন পঞ্চায়েত ও ভূমি সংস্কার দফতরের অফিসাররা। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই জেলাগুলিকে ‘প্ল্যাটিনাম জেলা’র তালিকায় রাখা হয়েছে। এদিন রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সার্বিক গ্রামীণ উন্নয়নে জোর দেওয়া উচিত। তার জন্য জমির রেকর্ড ডিজিটাইজেশন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কল্যাণমূলক প্রকল্পের বাস্তবায়নে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে ভূমি দফতরের রেকর্ড সেকশনের সংযোগ অত্যন্ত জরুরি।’