রবিবার বোলপুরে অমিত শাহয়ের রোড শোর সময়ই শহরের অপর প্রান্তে কালিকাপুরে ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’র আয়োজন করেছিল শাসকদল তৃণমূল। আর তার নেতৃত্বে ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেখানে দাঁড়িয়েই দলবদলে বিজেপি–তে যাওয়া তৃণমূল নেতা–বিধায়কদের কড়া বার্তা দিলেন বীরভূমের হেভিওয়েট নেতা। তাঁর কথায়, ‘কে যোগ দিল, কে যোগ দিল না তাতে কিছু বয়ে যায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখে তৃণমূলে রাজনীতি হয়।’
শনিবারই মেদিনীপুরের সভায় একজন সাংসদ, বেশ কয়েকজন বিধায়ক ও বহু কর্মীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি–তে যোগ দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া চাইলে অনুব্রত দাবি করে বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী যদি নন্দীগ্রামে দাঁড়ায় তা হলেও বিধায়ক হতে পারবে না। চ্যালেঞ্জ করলাম।’ অনুব্রত মণ্ডলের মতে, ‘যে সব বিধায়ক বিজেপি–তে গেছেন তাঁরা আর কোনওদিন বিধায়ক হতে পারবেন না।’
শুভেন্দুর পথ অনুসরণ করেই গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন কালনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। কিন্তু তার আগেই বিশ্বজিৎ কুণ্ডুকে দলে থাকতে বলেছিলেন অনুব্রত। এ ব্যাপারে এদিন তিনি বলেন, ‘ও ভুল করল। হেরে যাবে। আর বিধায়ক হতে পারবে না। কথা দিলাম। দরকার পড়লে আজকের তারিখ মনে রাখবেন।’
এদিন সন্ধেবেলা এক সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে অনুব্রত মণ্ডল বলেছেন, ‘সেকেন্ড ম্যান গিয়েছে, থার্ড ম্যান গেল, তাতে কী হবে! ফার্স্ট ম্যান তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের কিচ্ছু হবে না।’ নির্বাচনের আগে পর্যন্ত প্রত্যেক মাসে রাজ্যে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। এ ব্যাপারে এদিন অনুব্রত কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমি চাইব ভোটের আগে পর্যন্ত সপ্তাহে যেন তিনদিন করে ওরা আসে। তাতে আমার কর্মীদের উৎসাহ বাড়বে। কর্মীদের কাজ করতে সুবিধা হবে। যত আসবে তত কর্মীরা খাটবে।
উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগের পর তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনেকেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁর প্রতি। দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় দাবি করে বলেন, ‘নন্দীগ্রামে ৪০ শতাংশ মুসলিম ভোট আছে। জিতবেন কীভাবে! সংখ্যালঘুরা ভোট দেবে না। জিততে কষ্ট হবে।’ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘১০ বছরের মধ্যে সাড়ে ৯ বছর ভোগ করার পর শুভেন্দু অধিকারীর এখন মনে পড়ল। বিজেপি–তে যাওয়ার রাস্তা প্রসস্ত করার জন্য এখন উপলব্ধি হল?’