ভারতীয় জনতা পার্টিকে ‘মিথ্যার ডাস্টবিন’ বলে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ‘এত কুৎসা, এত মিথ্যা। অন্য কোনও দলে হয় না।’ বুধবার বাঁকুড়ায় জনসভা থেকে গেরুয়া শিবিরকে এক হাতে নিলেন তিনি। বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে বিজেপি–র সর্বভারতীয় নেতাদের ভিড় বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে। এদিনও তাঁদের ‘বাংলার বাইরের লোক’ বা বহিরাগত বলে জানান মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘বন্যা হলে, খড়া হলে ওদের পাত্তা নেই। কোভিড হলে, মাওবাদী আন্দোলনের সময় দেখা যায় না। আর আজ যখন মানুষ শান্তিতে আছে তখন কয়েকজন ‘দিল্লি কা লাড্ডু’কে বাংলায় পাঠিয়েছে অশান্তি করার জন্য। ওরা বাংলার লোক নয়। বাংলার বাইরের লোক। ওরা আপনার সব কেড়ে নেবে। সব লুঠে নেবে।’
এদিনও বাঁকুড়ার আদিবাসী বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কটাক্ষ করেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, ‘অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা করিয়ে দেবে বলে ওই আদিবাসী বাড়িটা নিয়েছিল খাওয়া–দাওয়ার জন্য। তিনি পাঁচতারা হোটেলে থেকেছেন, সেখানের রান্না–করা খাবার নিয়ে এসেছেন। আর তফসিলি ভাইবোনদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। লজ্জা করে না?’
বিজেপি–কে অপদার্থ রাজনৈতিক দল বলে আক্রমণ করে এদিন মমতা বলেন, ‘হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। দেশটাকে সর্বনাশ করে দিয়েছে। দেশে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। রেল, বিমান বেসরকারি করে দিয়েছে। কেন্দ্রের ডিএ দু’বছরের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক জায়গায় বেতন দেওয়া বন্ধ। উন্নয়নের কাজের জন্য রাজ্যগুলিকে কোনও টাকাই দেয় না। রাজ্য থেকে ট্যাক্স বাবদ টাকা কেন্দ্র নেয় আর তার একটা শতাংশ টাকা ফের রাজ্যকে বিভিন্ন স্কিমে দেয় কেন্দ্র। কিছু টাকা দিলেই বড়াই করে বলবে যে কেন্দ্র দিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘১০০ দিনের কাজে করার পর সেই বেতন পাওয়া যায় ৩ মাস পর। কারণ, সেই টাকা কেন্দ্র সুদে খাটায়। পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনের ভাড়াও দেয় না। আমাকে ৩০০ ট্রেনের ভাড়া দিতে হয়েছে।’
কৃষি আইনের বিরোধীতায় এদিন সরব হন মমতা। বলেন, ‘কৃষকদের জমি লুঠে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে একটা বিল পাস করেছে। আমরা কৃষকবন্ধুদের আড়াই হাজার টাকা করে প্রতিবছর দু’বারে ৫ হাজার টাকা দিই। কৃষকদের জমি থেকে কোনও কর নেয় না রাজ্য। মিউটেশন ফি মুকুব করে দেওয়া হয়েছে। শস্যবীমার টাকা আমরা দিই। কেন্দ্র কিছু দেয় না। শুধু, মাঝেমধ্যে বলবে, কৃষকরা কেন্দ্রের টাকা পেল না। অথচ আমরা চিঠি লিখে পাঠিয়ে দিয়েছি, যে ওই টাকা তোমরা রাজ্যকে দাও, আমরা কৃষকদের দিয়ে দেব। কিন্তু সেই কথায় কান দেয়নি কেন্দ্র।’