আগ্রাসী দাঁত দেখা যাচ্ছে। গাম্ভীর্য গায়েব। নেই শান্ত–সৌম্য রাজকীয়ভাব। এটা কখনই সম্রাট অশোকের আমলের সারনাথ মন্দিরের সিংহ নয়। বরং এই সিংহের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাতের গির অরণ্যের পশুরাজের সাদৃশ্য যথেষ্ট। নখ–দাঁত বের করা হিংস্র, স্থূলকায়। সোমবার ঘট পুজো শেষে ঘটা করে পর্দা উন্মোচন হয়েছে নির্মীয়মান নতুন সংসদ ভবনের ছাদে বসানো বিশালকায় জাতীয় প্রতীকের। তা নিয়ে দেশের তামাম বিরোধীরা তুলোধনা করেছেন মোদী সরকারের। আর সেখানে বীরভূম সফরে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন সিং মোদীকেই সমর্থন করলেন।
ঠিক কী বলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী? বীরভূমে আসার পর বুধবার তিনি সিউড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অংশগ্রহণ করেছিলেন চায়ে পে চর্চায়। সেখানে অংশগ্রহণ করার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অশোক স্তম্ভ বিতর্ক নিয়ে বলেন, ‘কংগ্রেসের সময়ে বহু কিছু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল। সেই সকল পরিবর্তনের পরিবর্তন করে বিজেপি আসল জিনিসটিকে আনতে চাইছে। সেই মতো অশোক স্তম্ভের ক্ষেত্রেও কংগ্রেসের পরিবর্তন করে দেওয়া অশোক স্তম্ভের পরিবর্তে আসল অশোক স্তম্ভ ফিরিয়ে আনল বিজেপি। অশোকস্তম্ভের সিংহের মুখের আকৃতি পরিবর্তন করা দরকার, তাই এটা করা হয়েছে। কংগ্রেস এটা করতে পারেনি।’
আপত্তি ঠিক কী নিয়ে? বিরোধীদের আপত্তি দুটি বিষয় নিয়ে। এক, সিংহের চেহারা আর অভিব্যক্তি। দুই, কেন নেই ‘সত্যমেব জয়তে’ লেখা? সবটা মিলিয়েই তো ভারতের জাতীয় প্রতীক। মোদী সরকারের এই ‘অপরাধে’র জন্য সংসদে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনারও ভাবনাচিন্তা চলছে বলেই খবর। ১৮৬০ সালে সারনাথ এবং ২০২২’ সালে সংসদ, দুই অশোক স্তম্ভের ছবি পাশাপাশি টুইট করে নেটিজেনদের নজর কেড়েছেন বিরোধীরা।
আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী বলছেন? কলকাতা সফরে আসা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘যাঁরা সংবিধান মানেন না, পদে পদে তার অসম্মান করেন, তাঁদের কথার গুরুত্ব নেই। বিরোধীরা অশোক স্তম্ভ নিয়ে যে দাবি করছে, তা মোটেও সত্য নয়। অশোক স্তম্ভ আগের মতোই রয়েছে।’ অশোক স্তম্ভ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর খোঁচা, ‘নয়া অশোক স্তম্ভ নিয়ে যে ‘বিশেষজ্ঞরা’ সমালোচনা করছেন, তাঁরা আদতে ইতিহাস জানেন না।’