একদিকে গত কয়েকদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এবার উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে করোনাভাইরাসে রাজ্যে দ্বিতীয় মৃত্যু হল। গতরাত দু'টো নাগাদ মারা যান কালিম্পঙের মহিলা।
আরও পড়ুন : COVID-19 Update: এই নম্বরে ফোন বা হোয়্যাটসঅ্যাপে করলে বাড়িতেই মিলবে চাল-আলু-দুধ
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মেয়ের চিকিৎসার জন্য গত ৭ মার্চ একা চেন্নাই গিয়েছিলেন ৪৪ বছরের ওই মহিলা। মেয়ের সঙ্গে গত ১৯ মার্চ চেন্নাই-বাগডোগরা বিমান ধরে কালিম্পঙে ফিরেছিলেন তিনি। বাগডোগরায় নেমে প্রথমে তিনি অবশ্য শিলিগুড়ির জ্যোতিনগরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান বলে জানান মহিলার পরিবারের এক সদস্য। সেখানে ঘণ্টাখানেক মতো কাটান।
করোনাভাইরাস সংক্রান্ত লাইভ আপডেটের জন্য এখানে ক্লিক করুন
পরদিন থেকে তাঁর জ্বর শুরু হয়েছিল। সেদিনই স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেই চিকিৎসক জানান, মহিলা খুব কাশছিলেন। ভাইরাল ইনফেকশন ভেবে তাঁকে ওষুধ দেন ও বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে বলেন। চিকিৎসক বলেন, 'তাঁর রক্তচাপ স্বাভাবিক ছিল। তাঁর অন্য কোনও অসুখও ছিল না। শুধুমাত্র তাঁর ওজন অত্যন্ত বেশি ছিল।'
আরও পড়ুন : Covid-19: লকডাউনের মেয়াদ বাড়ার গুজব উড়িয়ে দিল কেন্দ্র
তিনি আরও বলেন, 'গত ২৫ মার্চ মহিলা তাঁর চেম্বারে ফের আসেন। জ্বর না থাকলেও শুকনো কাশি হচ্ছে বলে জানান। আমি তাঁকে এক্স-রে করানোর পরামর্শ দিই। রিপোর্টে দেখা যায়, ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত মহিলা। সেজন্য তাঁকে টিবি পরীক্ষার কথা বলি। শিলিগুড়ি গিয়ে এক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতেও বলি।'
আরও পড়ুন : 'বিরাট' মনের পরিচয় দিলেন কোহলি-অনুষ্কা, করোনা মোকাবিলায় বাড়ালেন সাহায্যের হাত
ইতিমধ্যে প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হলে গত ২৬ মার্চ মহিলাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানে শ্বাসকষ্ট আরও বাড়ে।
আরও পড়ুন : Covid-19 মোকাবিলায় রেল কামরায় তৈরি হল আইসোলেশন ওয়ার্ড, জোর ভেন্টিলেটর উৎপাদনে
তারপর তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে নাইসেডে পাঠানো হয়েছিল। তা পজিটিভ এলে তাঁকে বিশেষ আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু ক্রমশ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। চিকিৎসায় তেমন সাড়া দিচ্ছিলেন না। ফুসফুসও ঠিকভাবে কাজ করছিল না। সেজন্য ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়েছিল। তাতে অবশ্য অবস্থার উন্নতি হয়নি। বরং ক্রমশ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যায়। তারপর গতরাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন : COVID-19 Update: সংক্রমণ রুখতে মোদীর ভরসা 'করোনা কবচ'
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মেয়ে-সহ মহিলার পরিবারের ১১ জন সদস্য, চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রী'কে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাঁদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। পাশাপাশি, কারা কারা ওই মহিলার সংস্পর্শে এসেছিলেন, তা খতিয়ে দেখার কাজ ইতিমধ্যে চলছে। কয়েকজনকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। তাঁদেরও গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।