পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনেও বুথে বুথে চলেছে তাণ্ডব। সে ক্ষেত্রে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে বেশি অভিযোগ উঠেছে। সিপিএমের দাবি, এই হিংসার ফলে তাদের বহু প্রার্থী, এজেন্ট আক্রান্ত হয়েছেন। তাছাড়া, সাধারণ নাগরিকও আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরেও পঞ্চায়েতের বহু আসনে জয়ী হয়েছে বামফ্রন্ট। এই অবস্থায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করবে সিপিএম। বিশেষ করে যারা আক্রান্ত হয়েছেন সেই সমস্ত এজেন্ট প্রার্থী এবং স্থানীয় মানুষের বাড়ি পৌঁছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিট দ্য ফ্যামিলি’। প্রসঙ্গত পঞ্চায়েত ভোট মিটে গিয়েছে। এবার লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। সেই অবস্থাই সিপিএম এ রাজ্যে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: বড় ৫ খবর: বাংলায় BJP-র লক্ষ্য ৩৫, পঞ্চায়েত রিপোর্ট সংগ্রহে দরজায় দরজায় বামেরা
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে দুদিন ধরে রাজ্য কমিটির বৈঠক হয়েছে। তাতে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে প্রাথমিক পর্যালোচনা হয়েছে। বুধবার বৈঠকে বক্তৃতা দেওয়ার সময় বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি পরে জানান, ‘আমরা মিট দ্য ফ্যামিলি কর্মসূচি নিচ্ছি। যারা পঞ্চায়েত নির্বাচনে আক্রান্ত হয়েছেন যারা প্রার্থী হয়েছিলেন, যারা জিতেছেন, বা হেরেছেন সেই সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমরা বাড়ি বাড়ি যাব। পঞ্চায়েত ভোটের অভিজ্ঞতা নিয়ে তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হবে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি রাজ্য কমিটিতে পর্যালোচনা করা হবে।’ রাজনৈতিক মহলের দাবি, আসন্ন লোকসভা ভোটে একজোট হয়েছে বিরোধীরা। ফলে সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএমকে এক মঞ্চে বসতে দেখা যেতেই পারে। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই সিপিএম আগে থেকেই এ রাজ্যে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলবে। সেক্ষেত্রের পরবর্তী সময়ে সিপিএম যে রাজ্যে তৃণমূল বিরোধী তা ব্যাখ্যা দিতে পারবেন দলের নেতারা।
বুধবার বৈঠক শেষে সিপিএমের তরফে গোলপার্ক থেকে হাজরার পর্যন্ত একটি মিছিল করা হয়। মিছিলে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে তৃণমূল বিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলে ছিলেন মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, কল্যাণ মজুমদারের মতো নেতারা। এদিন পঞ্চায়েত ভোটে নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করার পাশাপাশি মণিপুরের ঘটনা নিয়েও প্রতিবাদ জানানো হয়। এই মিছিল থেকে সেলিম বলেন, ‘মণিপুরের ঘটনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ রাজ্যে তৃণমূল সরকারের আমলে মহিলাদের নিরাপত্তা তলানিতে ঠেকেছে। তারও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা।’ এরপরে জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশ বাঁচানোর লড়াইয়ের জন্য ইন্ডিয়া জোট দেশের জন্য যে যে বিপদের কথা বলেছে বাংলাতেও তা প্রযোজ্য। আমরা বাংলায় বিজেপি এবং তৃণমূল দু দলের বিরুদ্ধে লড়াই করব।’